বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০১৬, ০৩:১০:৩১

২ বছরেই প্রেম শেষ, এখন শুধু নির্যাতন!

২ বছরেই প্রেম শেষ, এখন শুধু নির্যাতন!

রাজশাহী: ভালোবাসার টানে, সুখের সংসার করার এক বুক স্বপ্ন নিয়ে দুই বছর আগে পছন্দের মানুষকে বিয়ে করেন রিফাহ তাসফিয়া সালাম (২১)। বিয়ের পরে অল্প দিন স্বামীর সংসারে ভালোই কেটেছিল তাসফিয়ার। এরপর ধীরে ধীরে আসল রূপ বেরিয়ে আসতে থাকে তার স্বামীর।

এ কথা সে কথার একপর্যায়ে প্রকাশ্যে চেয়ে বসে যৌতুক। আর সে দাবিতে পান থেকে চুন খসলেই শুরু হয় মানসিক আর শারীরিক নির্যাতন। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে এ নির্যাতন। গত ১১ জুলাই সোমবার তাসফিয়ার ওপর নেমে আসে অমানবিক নির্যাতন। স্বামী আর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঝাঁপিয়ে পড়ে তার ওপর।

এমন নির্যাতনে তাসফিয়ার শরীরের বাম পায়ের দুই জায়গায়, বাম হাতের দুই জায়গায়, ডান হাতের এক জায়গায়, বুকের পাঁজরের দুটি হাড় ভেঙে গেছে। এছাড়া মাথায় ১৭টি সেলাই। এমন নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি তাসফিয়া। এ ঘটনায় তাসফিয়ার মা হোসনে আরা পারভীন বাদী হয়ে রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, দুই বছর আগে মহানগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকার ফজলুল হকের ছেলে শামিউল হক সোহাগের সঙ্গে রিফাহ তাসফিয়া সালামের বিয়ে হয়। বিয়ের অল্প দিন পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী সোহাগ প্রায় সময় মারপিট করতো তাসফিয়াকে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে এক লাখ ৫০ হাজার টাকাও দেয়া হয় সোহাগকে। কিন্তু এরপরও নির্যাতন চলতে থাকে।  

সোমবার বিকেলে সোহাগ, সোহাগের মা জাহানারা বেগম সুজি, ভাই ফয়সাল, বাবা ফজলুল হক ও সজীব মিলে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এতে তাসফিয়া গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন খবর পেয়ে তাসফিয়ার চাচা মীর আবু সাইদ শিমুলসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখান থেকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাকে রামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসেস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।

তাসফিয়ার মামা ফজলে রাব্বি জানান, তার ভাগ্নির ছয় মাসের এক মেয়ে সন্তান আছে। ওই শিশুটির কারণে ছোটখাটো নির্যাতনের কোনো ঘটনা ঘটলে তারা চুপ থাকতেন। ভাগ্নি জামাইকে বোঝানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু এবার ভাগ্নির ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে তারা। কোনো সুস্থ মানুষ কখনোই এভাবে নির্যাতন করতে পারে না।

এ ব্যাপারে রাজপাড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ জানান, আহত গৃহবধূর মা স্বামীসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।-জাগোনিউজ

১৩ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে