শরীয়তপুর : চারদিন হলো, এরপরও বাবার লাশটা কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। বাবার লাশটা পাইলেও মনটারে বুঝাইতাম।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের কলমিরচরে পদ্মা নদীর পাড়ে বসে এভাবেই আক্ষেপ করছিলেন নিখোঁজ মোসলেম ফকিরের (৭০) মেয়ে সাহিদা বেগম।
সাহিদা বেগমের বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নের কলমিরচর এলাকায়। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কলমিরচর এলাকায় সাহিদা বেগমের বাড়ি পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
এ সময় তাদের বাবা মোসলেম ফকির, আব্দুর রশিদ শিকদারসহ আশপাশের বাড়ির মোট আট ব্যক্তি পানির স্রোতে ভেসে যায়। সে সময় মোসলেম ফকির ও আব্দুর রশিদ শিকদার নদীভাঙনের ভয়ে বাড়ির আসবাবপত্র সরাচ্ছিলেন।
চারদিন আগে নদীভাঙনে নিখোঁজ হওয়া মোসলেম ফকির ও আব্দুর রশিদ শিকদারের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ পরিবারের অভিযোগ, তাদের দু’জনের সন্ধানে সরকারি কোনো সাহায্য সহযোগিতা পাননি।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল কাদের গণমাধ্যমকে জানান, উদ্ধারের জন্য তাদের কোনো নৌযান নেই। স্থানীয়ভাবে চেষ্টা চলছে।
এদিকে গত দুদিন ধরে কলমিরচর এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা আরো বেড়েছে। একইসঙ্গে নদীতে পানিও বাড়তে শুরু করেছে। ওই এলাকার নদীভাঙা পরিবারের সদস্যরা সরকারিভাবে তেমন কোনো সহায়তা পাচ্ছে না। তারা অনাহারে অর্ধহারে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এরই মধ্যে কলমিরচর এলাকায় কিছু অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার স্থানীয় সংসদ সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি সব প্রকার সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নদীর পাড়ের বাড়ি-ঘর ও মানুষজনকে পুরাতন থানার কাছে সরিয়ে নেয়ার জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সে জন্য স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় মাইকিং করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে প্রয়োজনী সাহায্য সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি।
২৬ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম