শরীয়তপুর : শরীয়তপুরের সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন হাওলাদারের ভাগ্নে আক্তার হোসেন ঢালী (২৭) পুলিশ সদস্য মো. সেলিম মাতুব্বরকে (৪২) থাপ্পড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সদর হাসপাতালের ডাক্তারের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ সদস্য মো. সেলিম মাতুব্বর মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সাতকরিয়া গ্রামের মৃত. আব্দুর ছাত্তার মাতুব্বরের ছেলে। এবং আক্তার হোসেন ঢালী সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন হাওলাদারের ভাগ্নে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, আক্তার হোসেন ঢালী তার মামা শরীয়তপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন হাওলাদারের কথা মতো সদর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার দেবাশীষ সাহাকে একটি অনৈতিক চিকিৎসা সনদপত্র দিতে বলে। তাদের পছন্দ মতো সনদপত্র দিতে অস্বীকার করলে আক্তার হোসেন ঢালী ডা. দেবাশীষ সাহাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। এ সময় চিকিৎসা নিতে আসা পুলিশ সদস্য সেলিম মাতুব্বর আক্তার হোসেন ঢালীকে গালমন্দ না করার জন্য বলে। তখন আক্তার রেগে গিয়ে সেলিমের কানে থাপ্পল মারলে তিনি ফ্লোরে পড়ে যায়। পরে কর্তব্যরত ডাক্তারা তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে ভর্তি মো. সেলিম মাতুব্বর বলেন, পুলিশ লাইনের চিকিৎসক ডা. মনিরুল ইসলাম আমাকে ডা. দেবাশীষ সাহার কাছে পাঠায়। আমার উপস্থিতিতে ডা. দেবাশীষ সাহা তাদের দাবি করা চিকিৎসা সনদ দিতে অস্বীকার করায় তাকে আক্তার অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। আমি তাকে গালমন্দ না করার কথা বললে সে আমাকে কানের উপর থাপ্পল মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে আমি ফ্লোরে পড়ে যাই।
ডা. দেবাশীষ সাহা বলেন, আমি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছিলাম। হঠাৎ করে আমার কক্ষে আক্তার হোসেন ঢালী ৩-৪জন লোক নিয়ে ঢোকেন। ঢুকেই সদর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের হোসেন খন্দকারের নামে একটি অনৈতিক চিকিৎসা সনদ দিতে বলেন। আমি দিতে অস্বীকার করলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন।
ডা. দেবাশীষ আরো বলেন, এ সময় পুলিশ সদস্য সেলিম মাতুব্বর গালাগালি করতে না বললে তার কানের উপর চড় মারতে শুরু করেন আক্তার। তখন সেলিম ফ্লোরে পড়ে যান। পরে আক্তার তার লোকজন নিয়ে চলে যায়। আমরা তাকে উদ্ধার করে তাৎক্ষণিক ভর্তি করি এবং কানের ডাক্তার দেখাই। ডাক্তার নিশ্চিত করেছেন তার কানের পর্দা ফেটে গেছে। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করা হয়েছে।
শরীয়তপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন হাওলাদার বলেন, আমার ভাগ্নে আক্তার যদি অপরাধ করে তাহলে তার আইনগত বিচার হবে। জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, এ ঘটনায় আক্তারকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করবো।
শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হোসাইন খান, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ্ আল মামুন ও শরীয়তপুর সিভিল সার্জন মো. মসিউর রহমান টগর পুলিশ সদস্য সেলিম মাতুব্বরকে সদর হাসপাতালে দেখতে আসেন।
০১ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি