শরীয়তপুর: সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙন অব্যাহত আছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় নড়িয়া উপজেলার বাঁশতলা এলাকার বিশাল বিশাল পাকা বাড়ি, ঘর, গাছপালা ও কলার বাগান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
আশপাশের বাড়ি-ঘর সরিয়ে নিতে দিনরাত কাজ করছে ভাঙনকবলিত মানুষ। অনেক পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তারা অনাহারে অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছেন। এ এলাকায় চাহিদার তুলনায় সরকারি ত্রাণ সামগ্রী অপ্রতুল। গেল দুদিন যাবত পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ মারাত্মক আতঙ্কে আছে।
ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে জানা গেছে, সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙন অব্যাহত আছে। গেল ২৪ ঘণ্টায় নড়িয়া উপজেলার বাঁশতলা এলাকার বিশাল বিশাল পাকা বাড়ি, ঘর, গাছপালা ও কলার বাগান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়া চারদিন পূর্বে ধসে পড়ে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নুতন ভবনটি। এ ভবনের আরও কিছু অংশ গেল বুধবার রাতে নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
ঝুঁকিতে রয়েছে মুলফৎগঞ্জ বাজারের প্রায় আট শতাধিক দোকান পাট ও একটি ব্যাংকসহ আশেপাশের কয়েকশ’ বাড়ি-ঘর। তারা বাড়ি-ঘর মালামাল সরিয়ে নিতে সারাক্ষণ কাজ করছে। ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের দাবি জরুরি ভিত্তিতে এ এলাকাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।
এদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামূল হক শামীম ভাঙনকবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে এসে দুদিন ধরে কাজ করছেন। তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন খুব শিগগিরই পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হবে।
মিহির চক্রবর্তী নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘পদ্মার ভাঙন অব্যাহতভাবে চলছে। প্রতিদিন নুতন এলাকা ভাঙছে। বিশাল বিশাল বাড়ি-ঘর, দালান-কোঠা বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়েছে। কমপক্ষে এক হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ভাঙনের মুখে।
শিরিন আকতার বলেন, নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বিলীন হওয়ায় আমাদের এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা ঝুঁকিতে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া না হলে স্বাস্থ্য সেবা ভেঙে পড়বে।
আবুল হাসেম বলেন, নদী আমাদের সবকিছু নিয়ে গেল। আমাদের আর কিছুই রইল না। আমরা এখন কোথায় যাব কি করবো। কেমনে বাঁচবো জানি না। আল্লাহ ছাড়া আমাদের কেউ নেই।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামূল হক শামীম ভাঙনকবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করে খোঁজ নিতে এসে বলেন, নদীতে প্রচুর স্রোত। নদীর গভীরতা এত বেশি যে এ মুহূর্তে বেড়িবাধেঁর কাজ করা সম্ভব না। পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়িবাঁধের কাজ শুরু করা হবে।