শরিয়তপুর থেকে : প্রেম মানে না জাত-ধর্ম। তবে জাত-ধর্মকে এড়িয়ে ভালোবেসে ঘর বাঁধতে গিয়ে কারাবরণ করতে হয়েছে তুষার নামে এক যুবকের। তুষারের বাড়ি শরিয়তপুর সদর থানার ধানুকা গ্রামে।
তুষারের বাবা হরিজন। হরিজনের ছেলে হয়ে ব্রাহ্মণের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি সুস্মিতার পরিবার। সুস্মিতার বাড়ি শরিয়তপুর পৌরসভার আংগাড়িয়ায়। ব্রাহ্মণ ও হরিজন জাত বিদ্বেষের কারণে শ্বশুরের দায়ের করা মামলায় সাজা হওয়া হরিজন জামাই তুষারকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
পরিবারের অমতে পালিয়ে বিয়ে করায় তুষারের বিরুদ্ধে ধ'র্ষণ ও অপহরণের মামলা করে ২০১৭ সালে। আদালত থেকে জামিন নিয়ে সুখেই কাটছিল সুস্মিতা আর তুষারের সংসার। ফুটফুটে কন্যা সন্তান তাতে যোগ করে বাড়তি আনন্দ। কিন্তু মন গলেনি মেয়ের পরিবারের।
ধ'র্ষণের মামলায় খালাস পেলেও অপহরণের মামলায় ১৪ বছর কারাদণ্ড হয় তুষারের। শুধু হরিজন সম্প্রদায় হওয়ার কারণে বিয়ে মেনে নেয়নি ব্রাহ্মণ পরিবার। উল্টো শ্বশুরের করা অপহরণের মামলায় জেল খেটেছেন স্বামী তুষার।
সনাতন হিন্দু ধর্মের হরিজন সম্প্রদায়ের তুষার বিয়ে করেন ব্রাহ্মণ মেয়ে সুস্মিতা দেবনাথকে। তিন মাসের সন্তান কোলে নিয়ে স্বামীর মুক্তির জন্য উচ্চ আদালত ঘুরেছেন সুস্মিতা।
অবশেষে বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে তুষারের স্ত্রী সুস্মিতার করা জামিন আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার এই জামিন দেন।
আদালত বলেন, আইনের চেয়ে জাত-পাত বড় হতে পারে না। একইসঙ্গে তুষারকে সাজা দেওয়া শরিয়তপুরের আদালতের ওই বিচারকের ভর্ৎসনা করেন হাইকোর্ট। সুস্মিতা নিজের ইচ্ছেয় বিয়ের কথা জানালেও আমলে নেননি আদালত।
তুষারের আইনজীবী জানান, নিজের ইচ্ছায় বিয়ের কথা আমলে না নিয়ে অপহরণের মামলায় ১৪ বছরের সাজা দেওয়া আইন বহির্ভূত হয়েছে।