শরীয়তপুর: শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাটে ছেলে ও মেয়েকে নিজের হাতে বিষপান করিয়ে নিজে বিষপান করেন সুমাইয়া আক্তার (২৩)। এতে সুমাইয়া আক্তার নামের ওই গৃহবধূ মারা গেছেন। মেয়ে হালিমা (৪) ও ছেলে আবু হুরায়রা হামজালাকে (২) পাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের অবস্থাও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আজ রবিবার দুপুর ৩টার দিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ওই নারীর মৃত্যু হয়। আর দুই শিশুকে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সুমাইয়া আক্তার গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের ঢালীরহাট লক্ষীপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী এবং একই গ্রামের সোহাগ খানের মেয়ে।
গোসাইরহাট থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সুমাইয়া আক্তারের ২০১৭ সালে একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। দুই শিশু সন্তান নিয়ে তারা উপজেলার দাশেরজঙ্গল এলাকায় সুমাইয়ার বাবার বাড়ির পাশে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সাইফুল ভ্যান-রিকশা চালিয়ে জীবন যাপন করেন। দারিদ্রতা নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি ছিল। প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীতে ঝগড়া হতো।
শনিবার রাতে ও রবিবার সকালে তাদের ঝগড়া হয়। আজ বেলা ১২টার দিকে সুমাইয়া দুই শিশু সন্তানকে বিষপান করান। এরপর নিজে বিষ পান করেন। পরে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তাদের অবস্থা সংকটাপন্ন হলে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুপুর ২টার দিকে সেখানে সুমাইয়ার মুত্যু হয়।
প্রতিবেশী ঝর্ণা বেগম বলেন, সুমাইয়ার শিশু সন্তানের চিৎকার শুনে ছুটে যাই। তখন জানতে পারি সুমাইয়া বিষ পান করেছে। এর আগে নিজের দুই সন্তানকে বিষ পান করিয়েছেন। দ্রুত তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই।
সুমাইয়ার স্বামী সাইফুল ইসলাম বলেন, স্ত্রী-সন্তানদের বিষ পানের খবর পেয়ে হাসপাতালে আসি। স্ত্রীকে মৃত পাই। সামান্য ঝগড়ার ঘটনা নিয়ে এভাবে সে চলে যাবে বুঝতে পারিনি। জানিনা আল্লাহ আমার শিশু সন্তান দুটির কপালে কি পরিণতি রেখেছেন।
সুমাইয়ার বাবা সোহাগ খান বলেন, মেয়ে-জামাই প্রায়ই ঝগড়া করত। সংসারের অভাব অনটন নিয়েই ঝগড়া হত। শনিবার সাইফুল আমার মেয়েকে মারধর করেছিল। সেই অভিমানেই হয়ত সে এ পথ বেছে নিয়েছে।
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা সোহেব আলী বলেন, বিষপানে এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। কিন্তু বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।