শরীয়তপুর : লজ্জায় কুকড়ে গেছে শিশুটি। মুখ নিচু করে কী যেন ভাবছে সে। কিন্তু কি-ই আর ভাবার আছে? কোনো ছাগল-গরু নয়, সেই শিশুকে শিকলে বেঁধে রোদে পোড়ানো হচ্ছে।
শিশুটির নাম নয়ন। বয়স মাত্র ৮ বছর। গলায় তার শিকল বাঁধা। শিকলের শেষ মাথা শক্ত খুঁটিতে তালা দিয়ে আটকানো। কাঠফাটা রোদে পোড়ানো হচ্ছে শিশুটিকে।
অসহায় শিশুটির দিকে তাকিয়ে হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠেছে পাড়ার নারী-পুরুষ। শিশুটি লজ্জায় কুঁকড়ে গেছে। এমন অমানবিক কাণ্ড দেখে অবুঝরাই হাসে।
নয়নকে রোদে পুড়িয়ে শাস্তি দেয়ার দৃশ্যটি ধারণ করা হয়েছে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চর কোয়ারপুর গ্রাম থেকে। নয়ন কোয়ারপুর গ্রামের মজিবর মাঝির ছেলে ও নড়িয়া উপজেলার রাজনগর তালতলা আলিয়া মাদরাসার ছাত্র।
অভিযোগ রয়েছে, মাদরাসা পালিয়ে ২৪ এপ্রিল রোববার সন্ধ্যায় গ্রামের পার্শ্ববর্তী ডোমসার বাজারের একটি দোকান থেকে তিনটি আরসি কোলা চুরি করে খেয়ে ফেলে নয়ন।
দোকানদার এ ব্যাপারে নালিশ করলে বাবা মজিবর মাঝি ছেলেকে শাস্তি দিতে বৈশাখের কাঠফাটা রোদের মধ্যে শিকলে বেঁধে রাখেন।
চর কোয়ারপুর গ্রামের কয়েকজন জানান, মাদারাসা থেকে পালিয়ে ডোমসার বাজারের এক দোকান থেকে আরসি কোলা চুরি করে খেয়ে ফেলে নয়ন। দোকানদার মজিবর মাঝির কাছে বিচার দেয়। তাই তার বাবা ছেলেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেন।
গ্রামবাসী অভিযোগ করে, মাদরাসা পলিয়ে শিশুটি প্রায়ই এলাকায় এটা-সেটা চুরি করে বেড়ায়। কারো গাছের আম আবার কারো লিচু চুরি করে। অন্য শিশুরাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
শিশুর বাবা মজিবর মাঝি জানান, ৪ হাজার টাকা খরচ করে ছেলেকে নড়িয়ার রাজনগর তালতলা আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি করিয়েছি। কিন্তু মাদরাসা থেকে পালিয়ে এলাকায় এটা সেটা চুরি করে বেড়ায়। কেউ গাছের ফল রাখতে পারে না। কেউ বিচার দিলে খুব খারাপ লাগে।
তিনি জানান , ২৫ এপ্রিল সোমবার সকালে ডোমসার বাজারে গেলে এক দোকানদার বিচার দেয়, তার দোকান থেকে তিনটি আরসি কোলা চুরি করে খেয়ে ফেলেছে সে। রাগ সামলাতে না পেরে তাকে তালাবদ্ধ করে রেখেছি।
২৫ এপ্রিল,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম