টাঙ্গাইল থেকে : বিয়ের একদিন পরই লাশ হয়ে ফিরলো তন্বী নামের এক কলেজ ছাত্রী। দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ালেও বিয়ের পরের দিনই তিনি অজানা কারণে স্বামীর বাড়িতে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তন্বীর মৃত্যুর বিষয় নিয়ে উভয় পরিবার পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন।
বুধবার (২০ জানুয়ারী) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বামী সাইমের বাড়িতে নিজের শোবার ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। স্থানীয় জোবেদা রুবেয়া সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী জান্নাতুল রুবাইয়াত তন্বী (২১) টাঙ্গাইলের বাসাইল পৌরসভার জরাশাহীবাগ এলাকার অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক হাশেম খানশুর এবং বাসাইল সদর ইউনিয়নের সাবেক মহিলা মেম্বার বিউটি আক্তারের ছোট মেয়ে।
তন্বীর স্বামী পৌরএলাকার পশ্চিমপাড়ার গিয়াসউদ্দিনের ছেলে সাদেক আহমেদ সাইম (৩৪)। জানা যায়, পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দা হিসেবে সাইম এবং তন্বীর পরিবারের মধ্যে জানা শোনা রয়েছে। পারিবারিক সুসম্পর্ক এবং পরিচয়ের সুবাদে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। সম্পর্কের বিষয়টি তন্বীর পরিবার জানার পর ভালোভাবে গ্রহণ করেনি। তবে বিভিন্ন জায়গা থেকে তন্বী এবং সায়েমের বিয়ের প্রস্তাব আসলেও উভয়েই অন্যত্র বিয়ে করতে রাজি হয়নি।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারী) দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয় তাদের। পরদিন শোবার ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে শাঁড়ি পেচিয়ে আত্মহত্যা করে সে। তন্বীর দেবর শাকিল খান বলেন, ভাই-ভাবী উভয়েই বিয়ের বয়সের জন্য উপযুক্ত। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ভাবীর (তন্বী) পরিবার বিয়ের কাবিনসহ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করলেও মেয়ের প্রতি তারা নাখোশ ছিলেন। বুধবার সকালে যখন ভাবী আমাকে এবং আমার ভাই সায়েমকে বাজার করতে পাঠান তখন তাকে খুব বিষন্ন লাগছিল। ধারণা করা হচ্ছে সকালে তিনি বাবা-মার সাথে মোবাইলে ঝগড়া করে রাগে ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছেন।
তন্বীর বাবা হাশেম খানশুর বলেন, 'আমি নিজে উপস্থিত থেকে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করেছি। বিয়ের মাত্র এক রাতের মাথায় মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা সত্যিই মর্মান্তিক এবং এটা স্বাভাবিক বলে মেনে নেয়া যায় না। আত্মহত্যার প্ররোচণায় আমার মেয়েকে প্ররোচিত করা হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট হাতে পেলে মামলার বিষয়ে এগিয়ে যাবো।' বাসাইল থানার ওসি হারুনুর রশিদ বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। বাসাইল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে।