রবিবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:৫১:২৮

মিয়ানমারে ২৫৪৩ বাড়ি ৩৫ মাদরাসা ১২ মসজিদ ভেঙে ফেলার নির্দেশ

মিয়ানমারে ২৫৪৩ বাড়ি ৩৫ মাদরাসা ১২ মসজিদ ভেঙে ফেলার নির্দেশ

দীন ইসলাম : মিয়ানমারের রাখাইন স্টেটের মংডু ও বুথিডং এলাকায় সব মিলিয়ে ২৫৪৩টি বাড়ি, ৩৫টি মাদরাসা, ১২টি মসজিদ ও ৬০৪টি দোকানপাট গুঁড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এসব স্থাপনার মধ্যে বেশিরভাগ ইতিমধ্যে ভেঙে ফেলা হয়েছে। মংডুর টাউনশিপ প্রশাসক উ হ্লা মিন্টের নির্দেশে এসব স্থাপনা ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র মারফত এসব তথ্য জেনেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দেশের শীর্ষ এক গোয়েন্দা সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে জানায়, রাখাইন স্টেটের মংডু ও বুথিডং এলাকার মসজিদ ও মাদরাসা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এজন্য গত ১৮ই সেপ্টেম্বর মংডু মা ইয়া কা প্রধানের সম্মেলন কক্ষে মংডু ও বুথিডং টাউনশিপের সব গ্রাম প্রশাসকদের সমন্বয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন মংডু মা ইয়া কা প্রধান (টাউনশিপ প্রশাসক) উ হ্লা মিন্ট। তিনি বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে মূল পরিবার থেকে দূরে তৈরি করা ২৫৪৩ বাড়িঘর, ১২ মসজিদ ও ৬০৪ দোকানপাট ভেঙে ফেলতে হবে। তিনি এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ গ্রাম প্রশাসকদের কাছে তুলে দেন।

একইভাবে পরদিন ১৯শে সেপ্টেম্বর এক বৈঠকে রাখাইন স্টেট সিকিউরিটি অ্যান্ড বর্ডার মিনিস্টার কর্নেল টিন লিন বলেন, অতি দ্রুত মংডু ও বুথিডং টাউনশিপের আওতাধীন এলাকার ২৫৪৩ বাড়ি, ৩৫ মাদরাসা, ১২ মসজিদ ও ৬০৪ দোকানপাট ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি এ নির্দেশ কেউ অমান্য করে, তাহলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভেঙে ফেলার তালিকায় মসজিদ, মাদরাসা ও দোকানপাট যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করা হয়। এ নিয়ে বর্তমানে মংডু ও বুথিডংয়ের মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিশেষ প্রতিবেদনে মন্তব্য কলামে বলা হয়েছে, মংডু ও বুথিডং টাউন রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা এবং স্থাপনাগুলোর অধিকাংশই মুসলিম মালিকানাধীন।

এসব স্থাপনাগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করায় এগুলো ভেঙে দেয়ার নির্দেশ বেআইনি এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মূলত রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওই এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার দুরভিসন্ধি নিয়ে এ আদেশ দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, রাখাইন স্টেটে নতুন করে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য সেনাবাহিনী এ নির্দেশ দিয়েছে বলে মনে হয়।

এছাড়া মিয়ানমারে সূচির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করাও এর একটি উদ্দেশ্য হতে পারে। বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই এলাকা থেকে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলে মিয়ানমারে আবারো জাতিগত সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। এরূপ ঘটনা ঘটলে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ বেড়ে যাবে।

এসব নির্দেশ কখন, কিভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে এ ব্যাপারে নজরদারি রাখার জন্য সীমান্তে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়া প্রয়োজন এবং সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রস্তুত রাখা যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মিয়ানমার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হচ্ছে সরকারের। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।  এমজমিন
৪ ডিসেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে