শনিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৭, ০৮:২৭:২০

নারী ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি মাত্র ৬০০ টাকা কেন? যা বললো বিসিবি

নারী ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি মাত্র ৬০০ টাকা কেন? যা বললো বিসিবি

স্পোর্টস ডেস্ক: মাঠের অভাবে হচ্ছে না নারী ক্রিকেটারদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। সেটি পুষিয়ে নিতে বিসিবির উইমেন্স উইং আয়োজন করতে যাচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগ। আটটি বিভাগীয় দলের এ আয়োজন কক্সবাজারে শুরু হবে ১৬ মে। প্রিমিয়ার লিগ খেলে যে অর্থ পান জাহানারা-রুমানারা তার সিকিভাগও পাবেন না এখানে খেলে। ম্যাচ ফি ১০ ভাগ বাড়িয়ে ৬০০ টাকা করা হয়েছে!

ক্রিকেট বাণিজ্যিকিকরণের এ যুগে ম্যাচ ফি কেন এত কম, এমন প্রশ্নের জবাবে বিসিবির উইমেন্স উইং চেয়ারম্যান এমএ আউয়াল চৌধুরী অসহায়ত্ব প্রকাশ করলেন। দুষলেন ‘কৃপণ’ স্পন্সরদের।

‘ছেলেদের ক্রিকেটে কোটি কোটি টাকার স্পন্সর এলেও মেয়েদের ব্যাপারে তারা কৃপণ। অনেক চেষ্টা করেও আলাদা স্পন্সর আনতে পারছি না।’ শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন আউয়াল চৌধুরী।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের জন্য স্পন্সরশীপ সত্ত্ব পাওয়া মানে নারী দল, একাডেমি দল, ‘এ’ দল, অনূর্ধ্ব-১৯ দলেরও পাওয়া। কেননা বিসিবি স্পন্সরশীপের জন্য এভাবেই টেন্ডার আহবান করে। অথচ নারী দল নাকি সেখান থেকে কোনও অর্থই পায় না। এজন্য এমএ আউয়াল চৌধুরী চাইছেন আগামী দুই বছরের জন্য যখন বিসিবি নতুন স্পন্সরের সঙ্গে চুক্তি করবে তখন তা আলাদা করে করতে।

‘ছেলেদের ন্যাশনাল টিমের স্পন্সর সত্ত্ব থেকে কোটি কোটি টাকা আসছে। কিন্তু মেয়েদের আলাদা স্পন্সর আসছে না। তাই নারী ক্রিকেট দলকেও ছেলেদের চুক্তির সঙ্গে একত্রিত করা হচ্ছে। এটা মেনেও নিতে হচ্ছে। কেননা কেউ এগিয়ে আসছে না। বড় বড় কোম্পানিকে আমরা বলি। কেউ আসে না। এবার আলাদা করে স্পন্সর নেওয়ার প্রস্তাব করেছি। সেটি না হলেও উইমেন্স উইংয়ের জন্য আলাদা করে যেন চুক্তি হয়।’

২০১৫ সালের জুন থেকে দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ দলের স্পন্সর মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি আজিয়াটা লিমিটেড। উইমেন্স উইং চেয়ারম্যানের অভিযোগ এই সময়ে নারী দলের জন্য তেমন কিছুই করেনি রবি।

অথচ চুক্তি অনুযায়ী নারী দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচে জার্সি ও ক্যাপে রবির লোগো ঠিকই ব্যবহার করা হচ্ছে। রবির কাছে উইমেন্স উইং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা আদায় করতে না পারা বিসিবির মার্কেটিং বিভাগের ব্যর্থতা কিনা-এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান এমএ আউয়াল চৌধুরী।

আগামী মাসেই শেষ হয়ে যাবে রবির সঙ্গে বিসিবির দুই বছরের চুক্তি। জুন থেকে দুই বছরে নতুন করে টেন্ডার আহবান করতে যাচ্ছে বিসিবি। এমএ আউয়াল চৌধুরী চান আগের মতো ভুল না করে নারী দলের জন্য আলাদা চুক্তি করে নিতে। স্পন্সরশীপে কোম্পানিগুলোর বৈষম্যের প্রভাব পড়েছে নারী ক্রিকেটারদের বেতন-ভাতায়। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেতনে আকাশ পাতাল ব্যবধান। ‘এ’ প্লাস গ্রেডে থাকা মাশরাফি-মুশফিক-সাকিবরা যেখানে পান ৪ লাখ টাকা, সেখানে জাহানারা-রুমানাদের বেতন মাত্র ৩০ হাজার টাকা। মেয়েদের ‘এ’ গ্রেডের ক্রিকেটাররা পান ২০ হাজার আর ‘বি’ গ্রেডের ক্রিকেটাররা পান ১০ হাজার করে। আন্তর্জাতিক ম্যাচে (ওয়ানডে) ছেলেরা যেখানে পান দুই লাখ টাকা, সেখানে নারী ক্রিকেটাররা পান ৮ হাজার টাকা। আসছে জুনে নতুন বাজেট হলে বেতন কিছুটা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে উইমেন্স উইং।

স্বল্প বেতন ও নামমাত্র ম্যাচ ফি নিয়ে নারী ক্রিকেটারদের কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। জাতীয় দলের কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ ব্যাপারে কেউ কথা বলতে রাজী হননি।
 ২৯ এপ্রিল ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে