সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭, ১০:৩৭:৪২

এই ‘টুকটুক’ অধিনায়ক লইয়া মোরা কী করিব!

 এই  ‘টুকটুক’  অধিনায়ক লইয়া মোরা কী করিব!

স্পোর্টস ডেস্ক: রকম হাস্যকর ভুল কিংবা রহস্যজনক ঘটনা ঘটবে কেন! রকম হাস্যকর ভুল কিংবা রহস্যজনক ঘটনা ঘটবে কেন! খুলনা টাইটান্সের কাছে ১৮ রানে হেরেছে চিটাগং ভাইকিংস। এ আর এমন কী! চিটাগং তো হারবেই! বিশেষ করে লক্ষ্য যদি হয় ১৭১ রান! আগের দুই ম্যাচে ভাইকিংসদের ‘অদ্ভুতুড়ে ব্যাটিং’ দেখে থাকলে যে কারও কাছে এই পরাজয় অনুমিত।

ত‌বে বিস্ময়টা এবার চট্টগ্রা‌মের বোলিংয়ে!

খুলনা শুধু পরাজিতই করেনি ভাইকিংসদের। অন্যভাবে দেখলে, চিটাগংকে যেন দারুণ একটা ব্যাটিং-শিক্ষাই দিলো টাইটান্সরা!

১০ ওভারে ৪ উইকেটে ৬৮ রান। এমন বাজে অবস্থা থেকে খুলনা শেষ পর্যন্ত করেছে ৭ উইকেটে ১৭০ রান! তার মানে শেষ ১০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে দলটি যোগ করেছে ১০২ রান! শেষ পাঁচ ওভারে তান্ডব চালিয়ে ৬৯ রান তুলে নিয়েছে খুলনা! এর পেছনে ‘বড় অবদান’ আছে চিটাগং কাপ্তানের!

অথচ দেখুন, চট্টগ্রাম প্রথম ম্যাচে কুমিল্লার সঙ্গে ১০ ওভারে এক উইকেটে ৯১ রানের পরও শেষ পর্যন্ত করেছিল ১৪৩/৭! দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুরের সঙ্গে ১০ ওভারে ১১২/২ অবস্থা থেকে থেমে গেছে ৪ উইকেটে ১৬৬ রানে! এই দুটি ম্যাচে হাতে পর্যাপ্ত উইকেট থাকার পরও চট্টগ্রাম শেষ ৫ ওভারে তুলেছে যথাক্রমে ২৯ ও ৩৫ রান!

এটা ঠিক, রংপুরের সঙ্গে কোনোক্রমে হলেও জিতেছে চিটাগং। তবে বলতে গেলে সেটা সম্ভব হয়েছে তাসকিন আহমেদের চমকের কারনেই। আবার এটাও অস্বীকার করা যাবে না, সিলেটের উইকেট ও মিরপুরের উইকেট এক নয়। তারপরও কথা থেকেই যায়। অন্তত হাতে উইকেট থাকলে চেস্টা তো করতে হবে ইনিংস সমৃদ্ধ করতে এবং পরের ম্যাচের জন্য আত্মবিশ্বাস জোগাড় করতে। বোলিং পরিবর্তনেও একটু দূরদর্শিতা তো থাকবে, নাকি?

গত দুই ম্যাচের তুলনায় আজ খুলনার সঙ্গে ৩৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তবুও কিছুটা চালিয়ে খেলেছে চট্টগ্রাম। প্রথম ১০ ওভারে ৭৪/৪, পরের ১০ ওভারে দলটি যোগ করেছে ৩ উইকেটে ৭৮। পার্থক্য বলতে চাপ কাটিয়ে খুলনা মেরেকেটে খেলেছে বলে জিতেছে। কিন্তু চট্টগ্রাম সেটা করতে পারে নি।

চট্টগ্রামের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৭ বল খেলেছেন মিসবাহ। একটি করে চার ও ছক্কাও মেরেছেন। তারপরও রান ৩০, স্ট্রাইকরেট ৮১.০৮! প্রথম ম্যাচে করেছেন ১১ বলে ৬ এবং দ্বিতীয় ম্যাচে ৩২ বলে অপরাজিত ৩১! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান ও অধিনায়কের স্ট্রাইকরেটই তিন ম্যাচে থেকে যায় শ’য়ের নিচে; সেই দলটি কতটা এগুতে পারে?

বোলিংয়ের সূচনা করে সানজামুল ইসলাম তার বাঁহাতি অফস্পিনের ক্যারিশমা দেখিয়ে পরপর দুই ওভারে (প্রথম ও তৃতীয়) উইকেট নিয়ে খুলনাকে যখন প্রায় ধসিয়ে দিচ্ছিলেন, তখনই কীনা বিস্ময়করভাবে তাকে আক্রমন থেকে সরিয়ে নেয়া হলো! এবং মিসবাহ বোধহয় ভুলেই গিয়েছিলেন তার কথা! শেষের দিকের পাওয়ার প্লে’তে বেশিরভাগ দলই যখন পেসারদের আক্রমণে আনে, তখন ১৭তম ওভারে সানজামুলের হাতে বল তুলে দিলেন মিসবাহ, রান উঠলো ১২।

যার হাত ধরে প্রথম দুটি উইকেটই পেল চট্টগ্রাম, সেই সানজামুলের একটা ওভার রয়ে গেল অব্যবহৃত; মিসবাহর কাছে এর ব্যখ্যা কী?

বিস্ময় আছে আরও! আগের ওভারে স্পিনার মার খেয়েছে দেখার পরও ১৮তম ওভারটি করানো হলো লেগস্পিনার তানভির হায়দারকে দিয়ে! ফল হলো নির্মম! রামধোলাই দিয়ে আরিফুল একাই তুলে নিয়েছেন ২৪ রান!

অথচ দেখুন, পেসার শুভাশিষ রায় ষষ্ঠ ওভারে প্রথম বোলিংয়ে এসে দিয়েছিলেন ৫ রান; ১২ তম ওভারে ৪। মানে দুই ওভারে ৯ রান! অথচ শুভাশিষকে মিসবাহ আবারও আক্রমনে আনলেন ১৯তম ওভারে! ওই ওভারে শুভাশিষ দিলেন ১২ রান। তারও একটা ওভার থেকে গেল!

দলের সেরা দুই বোলারকে সরিয়ে রেখে কেন অন্যদের হাতে বল তুলে দিলেন মিসবাহ, কেনই বা তাদের একটি করে ওভার অব্যাহৃত রয়ে যাবে; এসব যৌক্তিক প্রশ্ন উঠবেই!

এমন নয় যে, সানজামুল-শুভাশিষ কোটা পুর্ণ করলেই জিতে যেত চট্টগ্রাম, এমন কোনো গ্যারান্টি ছিল! কিন্তু এরকম হাস্যকর ভুল কিংবা রহস্যজনক ঘটনা ঘটবে কেন; তার তো একটা ব্যখ্যা থাকা দরকার!

বয়সের কারণেই কীনা কে জানে, মিসবাহ প্রত্যেক ম্যাচেই আত্নভোলা টাইপের নেতৃত্ব দিয়েই যাচ্ছেন। এবং সুবাদে চিটাগং ভাইকিংস অদ্ভুতুড়ে সব ঘটনার জন্ম দিয়েই যাচ্ছে! এর শেষ কোথায়?
১৩ নভেম্বর ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে