বরগুনা: গত সপ্তাহের দেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হচ্ছে বরগুনা সদর উপজেলায় প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে আঘাত করার বিষয়টি। এ গোটা বিষয়টি পাশের একটি বহুতলা ভবন থেকে কেউ একজন ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ার ছেড়ে দেয়। আর মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে যা ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। দোষীদের শাস্তির দাবি ওঠে সব মহল থেকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নববিবাহিত স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে নিয়ে নয়ন বন্ডের সঙ্গে রিফাত শরীফের দ্বন্দ্ব চলছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। এক সময়ের বন্ধু নয়ন দাবি করছিল মিন্নি তার স্ত্রী। মিন্নির সঙ্গে নয়নের প্রেমের সম্পর্কের বেশকিছু ছবিও ফেসবুকে পোস্ট করে সে। এসব বিষয় নিয়ে রিফাতের সঙ্গে দু-একবার কথাকাটাকাটি হয় নয়নের। এক সময়ের ছাত্রলীগ এবং পরে যুবলীগ কর্মী রিফাত শরীফও ছেড়ে কথা বলেননি নয়নকে। এ অবস্থায় রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে হুমকি দেয় নয়ন বন্ড। বিষয়টি নিজের মাকে জানায় রিফাত। সবকিছু শোনার পর পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত কলেজ এলাকায় গিয়ে মিন্নির সঙ্গে দেখা করতে ছেলেকে নিষেধ করেন রিফাত শরীফের মা। প্রয়োজন ছাড়া বরগুনা শহরে যেতেও নিষেধ করেন তাকে।
বৃহস্পতিবার এসব কথা বলেন রিফাতের মা। তারপরও বুধবার স্ত্রী মিন্নির সঙ্গে দেখা করা এবং তাকে নিরাপত্তা দিতে বরগুনা সরকারি কলেজে যায় রিফাত শরীফ। আর সেখানেই এই ঘটনা ঘটে। রিফাত শরীফের বাড়ি বরগুনা সদর উপজেলার ৬নং বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবণগোলা গ্রামে। তার বাবার নাম আ. হালিম দুলাল শরীফ। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন রিফাত।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রী মিন্নিকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান রিফাত। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরও দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালান। এ সময় ধারালো রিফাত শরীফকে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে তারা।
রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নি দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুতেই হামলাকারীদের থামানো যায়নি। তারা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি আঘাত করে চলে যান। পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রিফাত শরীফ শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।