বরগুনা থেকে : বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হ*ত্যাকা*ণ্ডের প্রধান সাক্ষী ও নি*হত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে গ্রে*ফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
আজ শনিবার রাত ৮টার দিকে এ সংবাদ সম্মেলন করেন নি*হত রিফাত শরীফের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ। সংবাদ সম্মেলনে নি*হত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে দ্রুত গ্রে*ফতারের দাবি জানান শ্বশুর আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ।
তিনি বলেন, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি আগে নয়ন বন্ডকে বিয়ে করেছিল। ওই বিয়ে গোপন করে রিফাত শরীফকে বিয়ে করে মিন্নি। বিষয়টি আমাদের জানায়নি মিন্নি এবং তার পরিবার। কাজেই রিফাত শরীফ হ*ত্যার পেছনে মিন্নির মদদ রয়েছে। তাকে গ্রে*ফতার করে আইনের আওতায় আনলে সব বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে দুলাল শরীফ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘মিন্নির সাথে মামলার প্রধান আ*সামি (পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযু*দ্ধে নি*হত) নয়ন বন্ডের বিয়ের খবর মিন্নি ও তার পরিবার সুকৌশলে গোপন রাখে এবং নয়নের সাথে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় শরিয়া বহির্ভূতভাবে রিফাতের সাথে বিয়ে করেছে। এমনকি রিফাতের সঙ্গে বিয়ের পর নয়ন বন্ডের সাথে নিয়মিতভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে সে।’
দুলাল শরীফের দাবি, ঘটনার আগের দিন ২৫ জুন সকাল ৯টার দিকে এবং সন্ধ্যায় নয়নের বাসায় যায় মিন্নি। মিন্নি অন্যান্য দিন রিফাতকে ছাড়া কলেজে গেলেও ঘটনার দিন রিফাতকে কলেজে ডেকে নিয়ে যায়। ঘটনার পূর্বমুহূর্তে কলেজগেট থেকে মিন্নিকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে আসতে চাইলেও মিন্নি চক্রান্তকারীদের উপস্থিতি না দেখে কালক্ষেপনের জন্য পুনরায় কলেজের দিকে ফিরে যাচ্ছিল এবং রিফাত মিন্নিকে ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা করছিল যা ভিডিও ফুটেজ দেখলে প্রমাণিত হবে।
রিফাতের বাবা আরও বলেন, রিফাতকে যখন আসামি রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী ও তার সহযোগিরা জাপটে ধরে মা*রপিট করতে করতে নিয়ে যায়, তখন মিন্নি অত্যন্ত সাবলীল ভঙ্গিতে পিছনে পিছনে হাঁটছিল, যা একজন স্ত্রীর কাছে প্রত্যাশিত নয়। তাছাড়া রিফাত শরীফকে নি*র্মমভাবে কু*পিয়ে হ*ত্যা করলেও মিন্নির শরীরে কোন আ*ঘাত করেনি স*ন্ত্রাসীরা। এমনকি হামলার পর রিফাত র*ক্তাক্ত অবস্থায় একা একা রিক্সায় হাসপাতালে যাচ্ছিল তখন মিন্নি তার ব্যাগ ও সেন্ডেল গোছানোর কাজেই বেশি ব্যস্ত ছিল এমনকি আসামিদের একজন রাস্তা থেকে ব্যাগ তুলে দিচ্ছিল মিন্নির।
তিনি বলেন, এছাড়া রিফাত শরীফকে অ্যাম্বুলেন্সে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও মিন্নি রিফাতের সাথে বরিশাল যায়নি। এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মিন্নিকে গ্রে*ফতার করে রি*মান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি জানান দুলাল শরীফ।
নি*হত রিফাতের বাবা প্রশ্ন তুলে বলেন, পুলিশ কেন এখনও মিন্নিকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে না। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে এ হ*ত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সকলকে গ্রে*ফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে মিন্নির বাবা মো. মোজ্জাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, রিফাতের বাবা দুলাল শরীফের অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট এবং কাল্পনিক। তিনি আমাদের হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই এসব অভিযোগ আনছেন।
তিনি আরও দাবি করেন, মিন্নির শ্বশুর তার নিজের বুদ্ধিতে এসব করছেন না, কারো প্ররোচনায় পড়ে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ আনছেন। দুলাল শরীফ শারীরিক এবং মানুষিক ভাবে অসুস্থ বলেও তিনি দাবি করেন।
কিশোর আরও বলেন, মিন্নি যদি জড়িত থাকে এ ব্যাপারে প্রশাসন অবশ্যই দেখতে পারে এ ব্যাপারে আমার কোন অভিযোগ নাই। মিন্নি এ মুহূর্তে শারীরিক এবং মানুষিকভাবে অসুস্থ বলেও দাবি তার বাবার।
গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা স্ত্রীর সামনে প্রকাশ্যে কু*পিয়ে হ*ত্যা করে রিফাত শরীফকে। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে হ*ত্যা মামলা করেন।