বরগুনা : বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হ.ত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নি.হত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি রিফাত হ.ত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন।
জাগো নিউজের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, মঙ্গলবার দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ ও বুধবার মিন্নির রিমান্ড মঞ্জুরের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছে মিন্নি। ইতোমধ্যেই মিন্নি রিফাত হ.ত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ হ.ত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও মিন্নি যুক্ত ছিলেন।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনা জেলা পুলিশের এক সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, ‘মূলত রিফাতকে হ.ত্যার পরিকল্পনা ছিল না। তাকে মা.রধর করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রিফাত শরীফের মৃ.ত্যু হয়।’
বরগুনা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ জুন বুধবার রিফাত শরীফ হ.ত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। ঘটনার দু’দিন আগে সোমবার হেলাল নামে এক ছেলের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় রিফাত শরীফ। হেলাল রিফাত শরীফের বন্ধু হলেও নয়ন বন্ডের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। সেই মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য নয়ন বন্ড মিন্নির দারস্থ হয়।
পরে রিফাত শরীফের কাছ থেকে ফোন উদ্ধার করে মিন্নি। কিন্তু ওই ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে রিফাত শরীফের মা.রধরের শিকার হন মিন্নি। পরে হ.ত্যাকাণ্ডের আগের দিন মঙ্গলবার নয়নের সঙ্গে দেখা করে মিন্নি সেই মোবাইল নয়নের হাতে তুলে দেন।
এ সময় মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফের হাতে যে মা.রধরের শিকার হয়েছেন তার প্রতিশোধ নিতে নয়নকে রিফাত শরীফকে মা.রধর করতে বলেন। তবে মা.রধরের সময় নয়ন যাতে উপস্থিত না থাকেন, সেটাও মিন্নি নয়নকে বলে দেন। এরপর ওইদিন সন্ধ্যায় বরগুনা কলেজ মাঠে মিটিং করে রিফাত শরীফকে মা.রধরের প্রস্তুতি গ্রহণ করে বন্ড বাহিনী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনা জেলা পুলিশের এক সদস্য জানান, ‘হামলার আগ মুহূর্তে রিফাত শরীফের সঙ্গে মিন্নি কলেজ থেকে বের হলেও কলেজের সামনে রিফাতকে মা.রধরের পরিকল্পনা অনুযায়ী কোনো প্রস্তুতি দেখতে না পেয়ে সময় ক্ষেপণের জন্য রিফাত শরীফকে নিয়ে আবার কলেজে প্রবেশ করেন।
এর কিছুক্ষণ পরই বন্ড বাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য একত্রিত হয়ে রিফাত শরীফকে আটক করে মা.রধর করতে করতে কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে পূর্ব দিকে নিয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী রিফাতকে মা.রধর করা হচ্ছে দেখেই মিন্নি তখন স্বাভাবিকভাবে হাঁটছিলেন।
পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে নয়ন বন্ড রিফাত শরীফকে মা.রধর শুরু করলে মিন্নি তখনই এগিয়ে আসে। মূলত মিন্নি রিফাত শরীফকে বাঁচাতে নয়, রিফাত শরীফকে মা.রধরের অভিযোগ থেকে নয়ন বন্ডকে বাঁচাতেই বারবার নয়ন বন্ডকে প্রতিহত করেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হন মিন্নি।’
এদিকে রিফাত শরীফ হ.ত্যা মামলার তৃতীয় আসামি রিশান ফারাজীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. শাহজাহান হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে কোথা থেকে রিশানকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তদন্তের স্বার্থে তা জানায়নি পুলিশ।-জাগো নিউজ