আরাফাত মুন্না ও মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু, বরগুনা থেকে : বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত হ'ত্যা মামলার আসামি আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিনের আবেদন গ্রহণ করে শুনানির জন্য ৩০ জুলাই দিন ধার্য করেছে জেলা আদালত।
জামিনের আবেদন নাকচ করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে মিন্নির আপিল মিস কেস হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। গতকাল বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নথি তলব করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পুলিশের সঙ্গে বন্দু'কযু'দ্ধে নি'হত এই মামলার প্রধান আ'সামি নয়ন বন্ডের মা শাহিদা বেগমের দাবি, প্রভাবশালী মহলবিশেষকে আড়াল করতেই তার ছেলেকে ক্রস'ফায়ারে মা'রা হয়েছে।
মিন্নির আইনজীবী মাহাবুবুল বারী আসলাম জানান, বেলা সাড়ে ১২টা থেকে প্রায় আধা ঘণ্টা শুনানি শেষে আবেদনটি মিস কেস হিসেবে নথিভুক্তির পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নথি তলব করা হয়েছে। তিনি বলেন, রিফাত শরীফ হ'ত্যা মামলায় ১৫ জন স্বীকারোক্তি দিলেও মামলার প্রধান সাক্ষী মিন্নি তার জবানবন্দি প্রত্যাহার করতে চাচ্ছেন।
তার দাবি, মিন্নিকে নি'র্যা'তন ও ভ'য়ভী'তি দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বীকা'রোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এদিকে, গতকাল দুপুরে শহরের ডিকেপি রোড (বরগুনা সরকারি কলেজের পেছনে) এলাকায় নিজের বাড়িতে নয়ন বন্ডের মা এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেন।
শাহিদা বেগম বলেন, ‘কেউ ষড়'যন্ত্র করেছে। কারও ইশারায়ই নয়নকে মে'রে ফেলা হয়েছে। ছেলেটার শরীরজুড়ে শুধু আঘা'তের চিহ্ন। হাতের নখ ওঠা'নো। পায়ে লাঠির আঘা'তের দাগ। কানও কাটা। আর গু'লিতে বুকটা ঝাঁ'জরা করা।’
ক্রস'ফায়ার হলে কি শুধু বুকেই গু'লি লাগবে? প্রশ্ন নয়ন বন্ডের মায়ের। তিনি বলেন, ‘ওর বাবা মা'রা যাওয়ার পর অনেক কষ্ট করে সংসার চালাইছি। কিন্তু নয়নকে কখনো কথা শোনাতে পারি নাই। একবার নাকি ১২ লাখ টাকার মাদ'কদ্রব্য নয়নের কাছে পাওয়া গেছে।’
এত টাকা সে কোথায় পেল? কে দিল? জানতে চান তিনি। তিনি বলেন, ‘নয়নকে নজরে রাখতে বাসায় সিসি ক্যামেরা লাগাইছি। হ'ত্যার পরপরই কারা যেন বাসায় এসে ওর কম্পিউটার নিয়ে গেছে। সিসি ক্যামেরাগুলা ভেঙে দিছে। শুনছি পুলিশের লোকজনই বাসায় আসছিল।’
শাহিদা বেগম বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গেও তো নয়নের সম্পর্ক ভালো ছিল। মাঝে মাঝে ফোন আসলে জানতে চাইতাম কে ফোন করেছে।
নয়ন বন্ডের মা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে দোষী, এটা আমি জানি। কিন্তু সে তো এক দিনে নয়ন বন্ড তৈরি হয়নি। তাকে তৈরি করা হয়েছে। বড় বড় লোকজন তাকে ব্যবহার করার জন্য নয়ন বন্ড হিসেবে তৈরি করেছে।’
কারা নয়নকে ব্যবহার করত- এমন প্রশ্নে শাহিদা বেগম বলেন, ‘সে আওয়ামী লীগ করত, এলাকার আওয়ামী লীগের অনেক নেতা নয়নকে বিভিন্ন জায়গায় ডেকে নিয়ে যেত। আমি নাম বলতে পারব না। তবে আমার ছেলেকে হ'ত্যা করা হয়েছে। কারণ, তার মুখ থেকে যদি প্রভাবশালী মহলের সব অপক'র্মের ঘটনা ফাঁ'স হয়ে যায়, সেই জন্যই।’ -বিডি প্রতিদিন