বরগুনা থেকে : গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে ট্রলার থেকে ছিটকে সমুদ্রে পড়ে গিয়েছিল বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের মঠেরখাল গ্রামের ইসমাইলের ছেলে ইমরান হোসেন (১৪)। তারপর লুঙ্গি ফুলিয়ে দীর্ঘ ৫ দিন সমুদ্রে ভেসেছিলো সে।
স্রোতে ভাসতে ভাসতে পৌঁছে যায় ভারতীয় সীমানায়। ইমরান হোসেন। বর্তমানে ভারতের রায়দিঘি থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে ইমরান। বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করে ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশের অপরাধে ইমরানকে উদ্ধার করে সেখানকার জেলেরা রায়দিঘি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী ইউনিয়নের মঠেরখাল গ্রামের ইসমাইলের মালিকানাধীন ট্রলারসহ ১২ জেলে নিয়ে ২৬ শে আগস্ট সমুদ্রে মাছ শিকার করছিলো ইমরান। পরদিন বলেশ্বর নদের মোহনায় হঠাৎ ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারটি।
মুহূর্তের মধ্যেই ইমরান ট্রলার থেকে ছিটকে সাগরে পড়ে যায়। এরপর স্রোত তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ইমরান বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের পরনের লুঙ্গি খুলে তাতে বাতাস ভরে ফুলিয়ে নেয়। তা ধরেই পাঁচ দিন সমুদ্রে ভেসে ছিল বলে জানায় ইমরান।
এদিকে ইমরানের সন্ধান না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে শনিবার ৩১ শে আগস্ট রাতে পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। এরপর শনিবার সকালে ভারতের একদল জেলে ইমরানকে উদ্ধার করে রায়দিঘি থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ ইমরানকে রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভারতীয় ট্রলার ‘এফবি বাবা পঞ্চানন’ এর চালক মনোরঞ্জন দাস সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ইমরানকে ভাসতে দেখে উদ্ধার করেন। ইমরানকে উদ্ধারকারী ট্রলারের মাঝি মনোরঞ্জন দাস জানান, আমরা দূর থেকে দেখলাম কি যেন ভাসছে। কাছাকাছি যেতেই দেখি একটি বালক লুঙ্গি ফুলিয়ে সেটা আকঁড়ে আছে। এরপরই তাকে ট্রলারে তুলে নেই আমরা।
ডায়মন্ড হারবারের মহকুমা প্রশাসক সুকান্ত সাহা বলেছেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধম্যে বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয় বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই আমরা বিভিন্নভাবে অনুসন্ধান করেছি। পরে জানতে পেরেছি ভারতীয় জেলেরা ইমরানকে উদ্ধার করে রায়দিঘি থানায় হস্তান্তর করেছে। ভারতের রায়দিঘি থানা পুলিশের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, দ্রুত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ইমরানকে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করবে তারা।