নিউজ ডেস্ক : মিন্নিকে নয়, জীবনের শেষ কথাটি রিকশা চালক দুলালকেই বলেছিলেন রিফাত শরীফ। গত ২৬ জুন বরগুনায় দু'র্বৃত্তদের হাতে হ’ত্যার শি'কার হন তিনি। ধা'রালো অ'স্ত্রে'র কো'পে র'ক্তা'ক্ত রিফাতকে যে রিক্সায় করে হাসপাতালে নেয়া হয়, সেই রিক্সার চালক দুলাল সেদিনের ভ'য়াবহ ঘটনাটির বর্ণনা দিয়েছেন।
ঘটনার বিবরণে দুলাল বলেন, ‘ওইদিন কলেজ সড়কে খ্যাপ নিয়ে গিয়েছিলাম। মানুষের ভিড়ের কারণে আর সামনের দিক যাইতে পারি না। শুনলাম সামনে কারা যেন কারে মা'রতে'ছে। প্যাসেঞ্জারকে নামিয়ে দিয়ে আমি রিকশা ঘুরাইয়া কেবল দাঁড়াইছি, সে সময় একটা ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় হাইট্টা আইসা আমার রিকশায় উইঠাই কয়, ‘চাচা আমারে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়া যান।’ সেটাই ছিল ছেলেটির শেষ কথা।’
‘আমি দেখলাম ছেলেটার গলা ও বুকের বামপাশ কা'ইট্টা র'ক্ত বাইর হইতেছে। হের জামাডা টাইন্না আমি গলা ও বুকে চাইপ্পা ধইরা হেরে কইলাম, আপনে চাইপ্পা ধরেন, আমি চালাই। আমি হাসপাতালে যাওনের জন্য কেবল সিটে বসছি, চালামু, সে সময় একটা মেয়ে দৌড়ে রিকশায় উইঠা ওই পোলাডারে ধইর্যা বসে। আমি তাড়াতাড়ি রিকশা চালাইয়া হাসপাতালের দিকে যাই।’
দুলাল বলেন, ‘এক মিনিটের মত রিফাত ঘাড় সোজা করে বসে ছিল। কিন্ত এরপর সে মেয়েটির কাঁধে ঢলে পড়ে যায়। আর ঘাড় সোজা করতে পারেনি। আমাদের রিকশার পাশাপাশি একটা লাল পালসার মোটরসাইকেলে দুইটা ছেলে যাচ্ছিল। মেয়েটি চিৎকার করে তাদের কাছে জখমে চেপে ধরে রক্ত থামানোর জন্য কাপড় চাইছিল। ওরা সাড়া দেয়নি। আমার কাছে মেয়েটি ফোন চায় তার বাড়িতে জানানোর জন্য। কিন্ত আমার ফোন নাই। পরে ওই মোটরসাইকেলের ছেলেদের কাছেও সে ফোন চায়। বলে, ‘ভাই আপনাদের একটা ফোন দেন, আমি একটু বাবার কাছে ফোন করব।’ কিন্ত তারা বলে, ‘আমাদের কাছে ফোন নাই, তুমি হাসাপাতালে যাইতেছো যাও।’
তিনি আরো বলেন, ‘হাসাপাতালের গেট দিয়ে ঢোকার সময় মেয়েটি একজন লোককে ডাক দেয়। রিকশা থামানোর সাথে সাথে ওই লোক দৌড়ে আসে। রিফাতের অবস্থা দেখেই আমাকে নিয়ে স্ট্রেচার আনতে যায়। আমি আর সেই লোক স্ট্রেচার নিয়ে আসি। রিফাতকে রিকশা থেকে নামিয়ে স্ট্রেচারে তুলে অপারেশন থিয়েটারে দিয়ে আসি।’
দুলাল বলেন, ‘রিফাতকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ আমার রিকশার ছবি তুলে নেয় আর কাগজপত্র নিয়ে যায়। আমার রিক্সার কাগজপত্র এখনো পুলিশের কাছেই আছে।’