বরগুনা থেকে : বছর পার হলেও বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ রিফাত হ'ত্যার র'হস্যের জট খোলেনি। রিফাত হ'ত্যার এক বছর পূর্ণ হবে শুক্রবার। এই দিনে বরগুনার কলেজ রোড এলাকায় স্ত্রীর সামনে প্রকা'শ্যে কু'পিয়ে হ'ত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে।
এই নি'র্ম'মভাবে হ'ত্যার পর থেকে দু'র্বি'ষহ দিন কা'টছে রিফাতের পরিবারের। হ'ত্যাকা'রীদের ফাঁ'সি ও দৃ'ষ্টা'ন্তমূলক শা'স্তি দাবি করছেন তারা। তবে আইনজীবীরা বলছেন, করোনার ক্রা'ন্তিকাল কা'টিয়ে উঠলেই শেষ হবে বিচার। এ হ'ত্যার সময় ওঠা মা'দকসহ, ক্ষ'মতাসীন দলের মধ্যক্যার দ্ব'ন্দ্ব, যো'গসা'জশ নিয়ে ওঠা অভিযো'গসহ রিফাতকে হ'ত্যার কারণের জ'ট খোলেনি এখনো।
জানা যায়, ফেসবুক ভিত্তিক বন্ড ০০৭ নামের একটি মেসেঞ্জার গ্রুপে শাহনেওয়াজ রিফাতকে হ'ত্যার পরিক'ল্পনা করেন হ'ত্যাকারীরা। পরিক'ল্পনা অনুযায়ী ২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বরগুনার কলেজ রোড এলাকায় কু'পিয়ে হ'ত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। এই গ্রুপটির নামকরণ করা হয়েছিল জেমস বন্ড সিরিজের ০০৭ নামের সঙ্গে মিল রেখে।
বন্ড গ্রুপের প্রধান ছিলেন নয়ন বন্ড এবং সেকেন্ড ইন কমা'ন্ড রিফাত ফরায়েজী গ্রুপটি পরিচালনা করতেন। বরগুনার কলেজ রোড এলাকায় ২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সোয়া ১০টার দিকে প্রকা'শ্য দিবালোকে স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি ও উপস্থিত শত শত মানুষের সামনে কু'পিয়ে খু'ন করা হয় শাহনেওয়াজ রিফাতকে।
এ ঘ'টনায় ২৭ জুন ১২ জনকে আসামী করে একটি হ'ত্যা মামলা দায়ের করেন নিহ'ত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। আসা'মীরা যখন এক এক করে গ্রে'প্তার হচ্ছিল ঠিক সে মুহূর্তে ২ জুলাই ভোরে পুলিশের সঙ্গে ''ব'ন্দু'কযু'দ্ধে'' নিহ'ত হন মামলার প্রধান আসামী সাব্বির আহমেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড।
ঘ'টনা নতুন মোড় নেয় ১৬ জুলাই। এই দিন সকালে জি'জ্ঞা'সাবাদের জন্য মামলার প্রত্য'ক্ষদর্শী সা'ক্ষি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে পুলিশ লাইনে নিয়ে এসে রাতে রিফাত শরীফ হ'ত্যায় জড়িত থাকার অ'ভিযো'গে গ্রে'প্তার দেখানো হয়। এরপর ২৮ আগস্ট উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসেন মিন্নি।
১ সেপ্টেম্বর মিন্নিকে অ'ভিযু'ক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামী করে দুই ভাগে বিভ'ক্ত মামলার চা'র্জশি'ট দেয় পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালত ও শিশু আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। দায়রা ও জজ আদালতে ৭৬ স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। শিশু আদালতে মামলায় তদ'ন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ এখনো হয়নি। করোনার ক্রা'ন্তিকাল কে'টে গেলে আবার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।
এ মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক আসামীদের মধ্যে মিন্নি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামীদের মধ্যে সাতজন জামিনে রয়েছেন। বাকিরা কারাগার ও যশোর শিশু কিশোর সংশো'ধনা'গারে রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক আসামী মুসা এখনো পলা'তক রয়েছে। এ বিষয়ে নিহ'ত রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বলেন, আমার ছেলের মৃ'ত্যুর পরে আমাদের পরিবারের সদস্যদের দিনগুলি খুবই দু'র্বি'ষহ কে'টেছে।
তিনি বলেন, একমাত্র আল্লাহপাকই জানেন কীভাবে আমরা দিনগুলি পার করেছি। সরকারের প্রতি আমার আকূল আবেদন যাতে এই মামলাটির বিচারকার্য শেষ করে দ্রুত রায় দেওয়া হয়। আমি নিজেই হৃ'দরো'গাক্রা'ন্ত তাই আমি যেন আমার ছেলের হ'ত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে পারি। আমার ছেলে মা'রা গেছে কিন্তু আমার পাশে আমি কাউকে পাইনি। দেশে এত দাতা সংস্থা, এত মানবাধিকার সংগঠন রয়েছে, কিন্তু তারা কেউ আমার পাশে দাঁড়ায়নি।
মামলার প্রত্য'ক্ষদর্শী সাক্ষি থেকে আসামী হওয়া নিহ'ত রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, সারাদেশের মানুষ দেখেছে আমার মেয়ে রিফাতকে বাঁচাতে অ'স্ত্রের মুখে স'ন্ত্রা'সীদের সঙ্গে কীভাবে ল'ড়েছেন। মামলার বিচাককার্য শেষ হলে আমার মেয়ে নি'রাপরা'ধ প্রমাণিত হয়ে মুক্তি পাবে।
শিশু আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, শিশু আদালতে মামলার তদ'ন্ত কর্মকর্তা ব্যতীত সব স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। কভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের কারণে আদালতের স্বাভাবিক প্র'ক্রি'য়া ব'ন্ধ থাকায় সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। করোনার ক্রা'ন্তিকাল অতি'ক্রম করে আদালত স্বাভাবিক প্রক্রি'য়ায় শুরু হলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিচারকার্য শেষ হবে।
বরগুনা জেলা দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি (পিপি) ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক আসামীদের বি'রু'দ্ধে ৭৬ স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। মামলাটি এখন আ'ত্মপক্ষ সমর্থনের অপেক্ষায় রয়েছে। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের করোনার প্রা'দুর্ভা'ব শুরু না হলে এত দিনে হয়ত মামলাটিতে বিজ্ঞ আদালত রায় দিতেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি পরিচালনা করেছি।