বরগুনা থেকে : বরগুনার আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ছরোয়ার ফোরকানকে ঋণখেলাপির দায়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজুকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে চেয়ারম্যান হিসেবে গেজেটভুক্ত করে দায়িত্ব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার বরগুনা যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আল মামুন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার খবর আমতলীতে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ছরোয়ার ফোরকানের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা এ রায় বাতিলের দাবি জানান। আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে পটুয়াখালী রূপালী ব্যাংকের শাখা থেকে নিজ নামে এক বছর মেয়াদি ১৬ লাখ টাকা ঋণ নেন ফোরকান; যা সুদে-আসলে ২৪ লাখ টাকা দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া তার মালিকানাধীন মেসার্স বনানী ট্রেডার্সের নামেও এক বছর মেয়াদি ঋণ তোলেন গোলাম ছরোয়ার ফোরকান; যা সুদে আসলে ২৭ লাখ টাকা হয়। ওই ঋণ পরিশোধ না করায় ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণখেলাপির তালিকায় তার নাম ওঠে। ঋণখেলাপির তথ্য গোপন করে ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত আমতলী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ওই নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন।
এতে সংক্ষুব্ধ হন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজু। ওই বছরের ২১ এপ্রিল ঋণখেলাপির তথ্য সংযোজন করে সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজু বরগুনা যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তিনি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম ছরোয়ার ফোরকানকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তাকে বিজয়ী ঘোষণার আবেদন করেন। বরগুনা যুগ্ম জেলা জজ প্রথম আদালত ও নির্বাচন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আল মামুন সব তথ্য যাচাই-বাছাই ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে এ আদেশ দেন।
এ রায়ে মামলার বাদী ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজু সন্তুষ্ট হয়ে বলেন, 'আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি।' আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম ছরোয়ার ফোরকান বলেন, 'আমি ন্যায়বিচার পাইনি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমি উচ্চ আদালতে যাব।' বরগুনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেন, 'এখনও আদেশ পাইনি। আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।'