এমটি নিউজ ডেস্ক: বরগুনার তালতলীতে মসজিদের ব্যাটারি চুরি করায় সালিশি বৈঠকে কাজী ডেকে স্বামী ফোরকানকে তালাক দিলেন স্ত্রী মাসুমা বেগম(৪৫)। আজ শনিবার উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে তালাক দেওয়ার এ ঘটনা এলাকায় আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
জানা যায়, ২০০০ সালে তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের বড়ইতলা আবাসনের বাসিন্দা মাসুমা বেগম ( ৪৫) এর প্রথম স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। এর পর ২০০৭ সালে বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নের শাহজাহান হাওলাদারে ছেলে ফোরকানের সাথে বিয়ে হয় মাসুমার। তারপর থেকেই আবাসনে বসবাস শুরু করেন তারা। বিয়ের পর থেকেই ফোরকান কোনো কাজকর্ম না করে বিভিন্ন স্থানে স্ত্রীর অজান্তে চুরি করতেন বলে জানা যায়। তাদের সংসারে ১২ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। এনিয়ে বিভিন্ন সময়ে সংসারে ঝামেলা বেধেই থাকতো।
আজ শনিবার ভোর রাতে উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের মধ্য পাওয়াপাড়া জামে মসজিদ ও পাওয়াপাড়া দোকানঘাট জামে মসজিদ থেকে তিনটি সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি চুরি করে ফোরকান। ব্যাটারিগুলো প্লাস্টিকের বস্তায় করে বিক্রির উদ্দেশ্যে বরগুনা যাওয়ার পথে স্বপন মৃধা নামের এক ব্যক্তি সন্দেহবশত ফোরকানকে আটক করে। পরে চুরির সত্যতা বেরিয়ে আসে। এরপর তাকে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জোমাদ্দার ও মসজিদ কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে, এ নিয়ে বড়ইতল আবাসনে স্থানীয়ভাবে সালিশ মীমাংসার জন্য বৈঠক বসানো হয়। ওই বৈঠকে স্বামী ফোরকান মসজিদের ব্যাটারি চুরি করার অপরাধে তার সাথে স্ত্রী মাসুমা বেগম সংসার না করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ও ইউপি সদস্যর উপস্থিতিতে ঔ ইউনিয়নে কাজী মহিবুল্লাহকে ডেকে স্বামীকে তালাক দেন স্ত্রী। পরে ব্যাটারিগুলো মসজিদ কমিটিকে ফেরত দেওয়া হয় এবং ফোরকানকে পুলিশে না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জমাদ্দার বলেন, মসজিদের ব্যাটারি চুরি হওয়ার বিষয়টি মুসুল্লিরা প্রথমে আমাকে জানায়। পরে বগীতে স্থানীয়রা ব্যাটারি চোরকে আটক করে আমাকে খবর দেয়। পরে ফোরকানকে নিয়ে স্থানীয় ভাবে বৈঠকের সময় তার স্ত্রী কাজী ডেকে তালাক দেয়।
স্ত্রী মাসুমা বেগম বলেন, ‘যে স্বামী আল্লাহর ঘর মসজিদ থেকে ব্যাটারি চুরি করতে পারে, তার সাথে আর যাই হোক ঘর-সংসার করা যায় না। এজন্য কাজী ডেকে সাথে সাথেই তাকে তালাক দিয়েছি।’ কাজী মুহিব্বুল্লাহ বলেন, ‘মাসুমা বেগমের স্বামী ফোরকান মসজিদের ব্যাটারি চুরি করার অপরাধে তাকে শরীয়ত মোতাবেক তালাক দেয়।’