এক্সক্লুসিভ ডেস্ক : বরগুনার আমতলীতে অসময়ে মাচায় তরমুজের চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছেন উপজেলার আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের কৃষক মো. হান্নান মোল্লা ও একই ইউনিয়নের আলগী গ্রামের মমতাজ পারভীন খান এবং কুকুয়া ইউনিয়নের সাহেববাড়ী এলাকার কৃষক মো. ওমর আলী।
তরমুজ মৌসুমি ফল। মৌসুমে তরমুজ চাষ মাটিতে হলেও অসময়ের ওই তরমুজ মাচায় চাষ হয়েছে। সাধারণত মৌসুমের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাজারে তরমুজ পাওয়া যায়।
এরপর আর বাজারে তরমুজ পাওয়া যায় না। কিন্তু অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষ করায় আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসেও বাজারে সুস্বাদু তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের মাচায় তরমুজ চাষী কৃষক হান্নান মোল্লার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি ১০০ শতক জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। গত জুন মাসের শেষ দিকে তিনি তরমুজের বীজ বপন করেন।
বীজ কেনার পাশাপাশি অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তাঁর প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। একটি গাছে চার-পাঁচটি তরমুজ আসে। সবগুলো রেখে দিলে তরমুজের আকার ছোট হয়ে যায়। ওই কারণে তাঁরা প্রতিটি গাছে দুটি করে তরমুজ রেখে বাকিগুলো ভেঙে ফেলেন।
এখন তাঁর মাচায় ও গাছে প্রায় তিন হাজার তরমুজ ঝুলে আছে। আর ওই তরমুজ বিক্রি করে তিনি ২ থেকে ৩ লাখ টাকা উপার্জন করবেন বলে আশা করছেন।
মাচায় তরমুজ চাষী কৃষক হান্নান মোল্লা বলেন, ব্লাক বেড়ি জাতের তরমুজ চাষে ফলন বেশ ভালো হয়েছিল। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারনে প্রথম ফলন ঝড়ে পরে যায়। দ্বিতীয় ফলন ভালো হওয়ায় এখন মাচায় অসংখ্য তরমুজ ঝুলছে। তরমুজের বাজার মূল্যও ভালো আছে। আশাকরি আয়-উপার্জনও ভালো হবে।
কৃষক মমতাজ পারভীন খান জানান, তিনি ৫০ শতক জমিতে অসময়ে জুলাই মাসের প্রথম দিকে পরীক্ষামূলক মাচায় বেঙ্গল টাইগার জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি খুশি তার রোপনকৃত তরমুজ গাছে বাম্পার ফলন হয়েছে।
একই পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করেছেন উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের সাহেববাড়ী বাসষ্ট্যান্ডের উত্তর পাশে আকনবাড়ী এলাকার কৃষক মো. ওমর আলী। তিনিও ১০০ শতক জমিতে অসময়ে পরীক্ষামূলক মাচায় বেঙ্গল টাইগার জাতের তরমুজের চাষ করেছেন। তিনি জানান, বীজ কেনার পাশাপাশি অন্যান্য খরচ মিলিয়ে তাঁর প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ভালো ফলন হওয়ায় এখন মাচায় অসংখ্য তরমুজ ঝুলছে। তরমুজগুলো সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে বিক্রি করে তিনি ভাল উপার্জন করবেন বলে আশা করছেন।
আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ঈসা বলেন, অসময়ে মাচায় তরমুজের চাষ বেশ লাভজনক। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে এতো লাভজনক ফসল আর নেই। বেলে-দোআঁশ মাটিতে ওই তরমুজ চাষ ভালো ও সুস্বাদু হওয়ায় কৃষকেরা এখন মাচায় তরমুজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন। অসময়ে ক্রেতারা বাজারে তরমুজ পাওয়ায় উপকৃত হচ্ছেন।