বরিশাল: গত ৫ দিন ধরে আকলিমা বেগমের বুক ফাটা কান্নায় ভারি হয়েছিল গ্রামের পরিবেশ। চোখের মণি পুত্র অসীম বিকালে খেলতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরেনি। ফেসবুকেও ছেলেটির সন্ধান চেয়ে পোস্ট করা হয়। অসিমের সন্ধান না পেলেও তার নিখোঁজ হবার পিলে চমকানো রহস্য উদঘাটন করে পুলিশ। অসিমেরই স্কুলের এক ছাত্র অসিমকে অপহরণ করে বিক্রি করে দিয়েছে। পুলিশ সেই ছাত্রকে আটক করে।
এরপর সে দেয় চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনাটি বরিশাল সদর উপজেলা সংলগ্ন বাকেরগঞ্জের চরামদ্দি ইউনিয়নে। নিখোঁজ অসিমের পারিবারিক সূত্র জানায়, অসিম স্থানীয় সাটিখোলা প্রাইমারি স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র। তার বাবা সাইদুল মৃধা একজন দিন মজুর। অসিম স্কুলের মেধাবী ছাত্র। তার রোল ২। ২৯শে এপ্রিল অসিম বন্ধুদের নিয়ে পাশের মাঠে খেলতে যায়। এরপর সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি।
অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান না পাওয়ায় মা-বাবার আহজারিতে প্রতিবেশীরাও খুঁজতে নামে। থানায়ও বিষয়টি জানানো হয়। চারদিন পর একটি ক্লু পেয়ে পুলিশ নড়েচড়ে বসে। আটক করা হয় বরিশাল সদর উপজেলার চাঁদপুরা ইউনিয়নের ব্যাটালিয়নে চাকরি করে রুস্তম আলী হাওলাদারের ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তানভীরকে। তানভীর ওইদিন অসিমের সঙ্গে খেলা করছিল। তানভীরকে আটক করে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া যায় অসিমের নিখোঁজ হবার রহস্য।
চরামদ্দি ইউনিয়নের পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মানিক জানান, তানভীর আহমেদ নাইম স্থানীয় সাটিখোলা প্রাইমারি স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। যদিও তার বয়স নাঈমের চেয়ে বেশি মনে হয়। আবার সে একটি লঞ্চে কাজও করে। ওই দিন খেলার ফাঁকে অসিমকে নিয়ে রওনা দেয় নাঈম। তাকে বাজারে বসে ঝালমুড়ি খাওয়ায়। এরপর বেড়াতে যাবার কথা বলে লঞ্চে উঠে। নাঈম পুলিশকে জানিয়েছে ওই লঞ্চে বসেই সে অসিমকে একজনের কাছে বেচে দেয়। পুলিশ এখন তানভীরের দেয়া তথ্য যাচাই করে অসিমকে উদ্ধারে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
অপর একটি সূত্র জানায় তানভীর পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে এধরনের অপকর্ম আরও করেছে। লঞ্চে চাকরি করার সুবাদে সে বাচ্চাদের ফুসলিয়ে লঞ্চে উঠায়। এরপর বিক্রি করে। তবে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে বেশি কিছু বলতে চায়নি। এসআই মানিক জানান, আগে অসিমকে উদ্ধার করা হবে। তারপর সব কিছুই প্রকাশ্যে আনা হবে।-মানবজমিন
৫মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ