রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৬, ০৯:০৮:৪৩

নিখোঁজ সেই সুন্দরী মেঘলাকে নিয়ে রহস্য!

নিখোঁজ সেই সুন্দরী মেঘলাকে নিয়ে রহস্য!

বরিশাল : খুলনার রূপসা থেকে মাস ছয়েক আগে নিখোঁজ।  সেই সুন্দরী তরুণী খাদিজা নুর মেঘলা জঙ্গি নাকি প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়েছে? এ প্রশ্নের কোনো উত্তর মেলেনি।  এ তরুণীকে নিয়ে রহস্যের মেঘও কাটছে না।

সম্প্রতি দেশে কয়েকটি জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার পর সারাদেশের নিখোঁজদের তালিকা প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  খুলনা জেলা থেকে নারীসহ ১৬০ জন নিখোঁজের তালিকা প্রকাশ করেছে প্রশাসন, যাদের প্রাথমিকভাবে জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।  এ তালিকায় নাম রয়েছে তরুণী মেঘলার।

যদিও নিখোঁজদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার প্রমাণ মিলেছে।  আবার অনেকে প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছে।  তালিকা প্রকাশের পরই অনেক তরুণ-তরুণী তাদের পরিবারকে বিষয়টি অবগত করেছেন।

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, রূপসা থেকে কার টানে তরুণী মেঘলা বরিশাল সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের হাসপাতাল রোড এলাকায় পল্লীতে অবস্থান নিয়েছে? বিষয়টি পরিষ্কার নয়।  এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় মেঘলার আত্মগোপনের বিষয়টি রহস্যময় হয়ে উঠেছে।

যদিও পুলিশ বলছে, বিষয়টি সম্পর্কে তারা কিছুই জানে না।  তারা খোঁজ-খবর নিয়ে মেঘলার এভাবে আত্মগোপনের বিষয়ে খতিয়ে দেখার কথা বলেছে।

জানা গেছে, তরুণী মেঘলা খুলনার রূপসা থানার আইচগাতা এলাকার মৃত মোক্তার হোসেনের মেয়ে। স্থানীয় বঙ্গবন্ধু কলেজের অনার্স প্রথমবর্ষের ছাত্রী।

চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাসা থেকে কলেজে যাওয়ার পথে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ১৬ মার্চ মেঘলার মা আনোয়ারা বেগম রূপসা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন, যারনং-৭৪৫।

গত ৫ মাস ধরে মায়ের করা জিডি রূপসা থানায় তদন্তের হিমাগারেই পড়েছিল।  সম্প্রতি জঙ্গিবাদে জড়িতদের তালিকা প্রকাশ হলে নিখোঁজ মেঘলাকে নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন ওঠে।  তার অবস্থান নিশ্চিত না হওয়ার কারণে রূপসা থানা পুলিশ নীরবতাই পালন করে।

তবে তরুণী মেঘলার নিখোঁজ হওয়ার পেছনের একটা গল্প বের হয়ে এসেছে।  বরিশালের সদর উপজেলার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের হাসপাতাল রোড এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে সাঈদ মিয়া রূপসা থেকে তরুণী মেঘলাকে অপহরণ করেন।

এরপর তাকে আটকে রাখা হয় অপর অপহরণকারী হাবিবুর রহমানের বাসায়।  অপহরণকারী হাবিবুর রহমান আর সাঈদ সম্পর্কে মামা ও ভাগ্নে।  সাঈদ পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী।

অন্য একটি সূত্রের দাবি, অপহরণ নয়, প্রেমের টানেই বাড়ি ছেড়েছে তরুণী মেঘলা।  সাঈদ মিয়া তাকে বিয়ে করেছে বলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ঘটনাটি এতদিন গোপন থাকলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জঙ্গির তালিকায় মেঘলার নাম আসায় এ নিয়ে নানা গুঞ্জন শুরু হয়।

জানা গেছে, অপহরণের পর তরুণী মেঘলাকে নিয়ে সাঈদ মিয়া যশোরেও অবস্থান নিয়েছিলেন।  কিন্তু বিষয়টি জেনে পুলিশের তৎপরতা শুরু হওয়ায় তারা পালিয়ে বরিশালে চলে আসেন।

স্থানীয়দের দাবি, মেঘলাকে অপহারণকারীর তালিকায় সাঈদ মিয়া ও তার মামা হাবিবুর রহমান ছাড়াও রয়েছে মামাতো ভাই আব্দুর রব মিয়ার ছেলে কালামও।  

বরিশাল পুলিশের সতর্ক অবস্থানের মধ্যেও তালিকাভুক্ত নিখোঁজ তরুণী কীভাবে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।  তরুণীটি নিখোঁজ থাকার পর খুলনার রূপসা থানায় তার মা জিডিও করেছেন।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার (এসি) ফরহাদ সরদার গণমাধ্যমকে জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে।  তরুণীকে অপহরণের ঘটনায় কোনো ব্যক্তির জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।  তরুণীটি জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত কি-না তাও খতিয়ে দেখা হবে।  
৩১জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে