আবু মুত্তালিব মতি, আদমদীঘি (বগুড়া): বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলায় ধানের লোকসান কাটিয়ে উঠতে লাভের আশায় মরিচ চাষ করেও কৃষকরা লোকসানের হাত থেকে রেহায় পাচ্ছেন না। চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের বাজারে দাম কম হওয়ায় কৃষকরা লোকসানে পড়েন। সেই লোকসানকে পুষিয়ে নিতে তারা কাঁচা মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়েন। কিন্তু বর্তমান বাজারে মাত্র ১২ টাকা কেজিতে মরিচ বিক্রি করায় ধানের লোকসান পুষিয়ে নেয়াতো দূরের কথা মরিচ চাষে উৎপাদন খরচই তুলতে পারছেন না। এখানেও কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফলে তারা হতাশায় পড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আদমদীঘি উপজেলার কোমারপুর, মঙ্গলপুর, জিনইর, কাশিমালা, শিবপুর, কড়ই, সালগ্রাম, আমইল, তেতুলিয়া, ছাতিয়াগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় বর্ষা মৌসুমে ১৮৮বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করে। বিগত বছরের তুলনায় এবার মরিচ চাষের পরিমাণ বেশি ছিল। এখানকার মরিচ ঢাকা চট্রগ্রাম সিলেট কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকযোগে সরবরাহ করা হয়।
উপজেলার কোমারপুর গ্রামের মরিচ চাষি নূর মোহাম্মাদ জানায়, ইরি বোরো ধান বাজারে কম দাম পাওয়ায় সেই লোকসান পুষিয়ে নিতে এবার বেশি জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে। এক বিঘা জমিতে মরিচ চাষে জমি তৈরি লাগানো, ফসলে খাবার, পোকা দমনে ঔষধ প্রয়োগ, পরিচর্যা শ্রমিকের মজুরিসহ বিভিন্ন খাতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচা হয়ে থাকে। কিন্তু মাত্র ১২ টাকা কেজিতে মরিচ বিক্রি করে উৎপাদন খরচ তোলা সম্ভব হচ্ছে না। সালগ্রামের মরিচ চাষি হামিদুল ইসলাম সাড়ে ৮ হাজার টাকা খরচ করে ১০শতক জমিতে মরিচ চাষ করে দাম কম পাওয়ায় হতাশায় পড়েছেন।
কাঁচা মরিচ পাইকার ব্যবসায়ী ফারুক হোসেনসহ কয়েকজন জানায়, আদমদীঘি এলাকা থেকে কক্সবাজার, সিলেট, কুমিল্লা, চট্রগ্রাম রিয়াজ উদ্দিন বাজার, ঢাকার কাওরান বাজার, মিরপুর, চৌরাস্তাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার মন কাঁচামরিচ ট্রাক যোগে সরবরাহ করা হয়। বাজারে কাঁচা মরিচের অধিক সরবরাহ ও পাইকার কম থাকায় মূল্য কমে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিঠুন চন্দ্র অধিকারী জানায়, এবার কাঁচা মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজারে সরবরাহ বেশি কিন্তু পাইকার বা ক্রেতা কম থাকায় কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমে গেছে। সম্পাদনা : মিঠুন রাকসাম
সূত্র: আমাদেরসময়