শেরপুর (বগুড়া) : বগুড়ার শেরপুর উপজেলার প্রান্তিক গ্রামে ঘুরে খামারিদের বাড়িতে গিয়ে উৎসাহ উদ্দিপনা বৃদ্ধি করছেন শেরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদের প্রধান কর্মকর্তা ডা. আমির হামজা। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের খোট্টাপাড়া গ্রামের আলহাজ্ব নুরুল ইসলামের ছেলে এগ্রিকালচার ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী মাইনুল ইসলাম পলাশের গরুর খামারে এখন সফলতার আলো এভাবেই গ্রামে গ্রামে ঘুরে সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
২০১৪ সালের মাঝামাঝি ৫ লাখ টাকা মূলধনের মাধ্যমে ৭ টি গর্ভবতী গাভী নিয়ে মাইনুল ইসলাম পলাশ শখের বশে শুরু করেন তার গাভীর খামার। এগ্রিকালচার ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী পলাশ জানান, ছোটবেলা থেকেই গবাদিপশু লালন-পালনের প্রতি তার আলাদা টান ছিল, ডিপ্লোমা পাশ করার পর যখন চাকরি হচ্ছিল না, তখনই সিদ্ধান্ত নেন গাভীর খামার করার। খামার শুরু করার ৬ মাসের ব্যবধানে গাভীগুলো বাচ্চা দেয় এবং গরুর সংখ্যা বেড়ে বাচ্চা সহ হয় ১৪ টি। সেই যে শুরু আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। দুধ আর বাছুর মিলে পলাশের খামারে সফলতার আলো পৌঁছে যায় দ্রুতই।
শেরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের কারীগরি সহায়তায় বর্তমানে পলাশের খামারে মোট গাভী এবং বাছুরের সংখ্যা ৫০ টি। এর মধ্যে ২৮ টি গর্ভবতী গাভী, ১০টি দুধের গাভী এবং ১২টি বাছুর রয়েছে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫০-৬০ লাখ টাকা। খামারি পলাশ জানান, তিনি বর্তমানে ৪০-৪৫ টাকা দরে দৈনিক ১০০ লিঃ দুধ বিক্রি করছেন। গর্ভবতী গাভীগুলো বাচ্চা দিলে দুধের উৎপাদন দৈনিক প্রায় ২০০লিটার হবে। গাভীগুলো দেখাশুনার জন্য ৩ জন লোক তার খামারে নিয়মিত কাজ করছেন। খর এবং কাচা ঘাস নিজের জমির হওয়ায় গরুর দানাদার খাদ্য এবং শ্রমিকদের মজুরি বাবদ তার মাসিক খরচ হয় গড়ে ৭৫ হাজার টাকা। দুধ বিক্রি করে মাসিক আয় হয় প্রায় ১ লাখ টাকা।
পলাশ জানান, তার খামারের মূল আয় আসে মূলত ষাড় বাছুর বিক্রি এবং গর্ভবতী গাভী বিক্রি করার মাধ্যমে। ভালো জাতের হওয়ায় প্রতিটি ৬-৭ মাস বয়সী বাছুর বিক্রি করেন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। তিনি আরও জানান, বর্তমানে এই খামার থেকে প্রতি বছর তার আয় হচ্ছে প্রায় আট লাখ টাকা। পলাশের ইচ্ছা সফলতার এই ধারা অব্যাহত থাকলে তিনি তার খামারে ১০০টি গাভী লালন-পালন করবেন।
পরিদর্শনের সময় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আমির হামজা বলেন, আমরা সবসময়ই খামারীদের পাশে আছি। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা সবসময়ই খামারীদের প্রয়োজন অনুযায়ী খামার গুলো পরিদর্শণ করছে যদিও আমার দায়িত্বের অতিরিক্ত এই কাজ তার পরও জনগনের সার্থে সাথে আমরাও আছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আমির হামজার সহযোগী সম্প্রতি যোগদান করা এনএটিপি, এলডিডিপি প্রকল্পের দুই জন কর্মকর্তা ডাঃ মিজবাহ এবং সানজিদা হকসহ উপ-সহকারী প্রানিসম্পদ অফিসার লাভলু, এলএসপি নুরুল হকসহ খামারিরা। প্রাণিসম্পদক কর্মকর্তা ডা: আমির হামজা আরো বলেন, শিক্ষিত যুবকরা যদি বসে না থেকে মাইনুল ইসলাম পলাশের মত খামার করে পরিচর্যা করে তাহলে তারাও যেমন লাভবান হবে দেশও উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে।