রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০২০, ১২:৫৩:০৯

করোনার প্রভাব : বেগুন ২ টাকা মুলা ১ টাকা কেজি

করোনার প্রভাব : বেগুন ২ টাকা মুলা ১ টাকা কেজি

ফজলুল হক শাওন , বিশেষ সংবাদদাতা: বগুড়ায় বেগুন দুই টাকা, মুলা এক টাকা, কাঁচা মরিচ ও করলা ১০ টাকা, শসা চার টাকা, টমেটো পাঁচ টাকা, ফুলকপি পাঁচ টাকা, বাঁধাকপি তিন টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয়েছে ৭-৮ টাকায়।

শনিবার (২৯ মার্চ) বগুড়ার মহস্থান পাইকারি বাজারে সবজির এমন বাজার গেছে।

আড়তদাররা বলছেন, করোনার প্রভাব পড়েছে মহাস্থান পাইকারি বাজারে। এ বাজারে দুই থেকে তিন হাজার পাইকার আসতো। এখন পাইকারের সংখা ২০০-৩০০ জন। তাও দূরের পাইকার নয়। এতে চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষক।

বগুড়া শেরপুরের সালপা গ্রামের বশির উদ্দিনসহ ৭-৮ জন কৃষক পিকআপ ভাড়া করে বেগুন, মুলা, টমেটো, ফুলকপি, মিষ্টি কুমড়া, শসা ও করলা নিয়ে শনিবার মহাস্থান পাইকারি বাজারে আসেন।তারা যে পরিমাণ পণ্য নিয়ে যান তা বিক্রি করে পিকআপের ভাড়ায় উঠেনি। বরং আড়ৎ ভাড়া ও খাওয়া খরচসহ যে টাকা ব্যয় হয়েছে তা বাড়িতে গিয়ে পরিশোধ করতে হয়েছে।

জানা গেছে, করোনার প্রভাবে বগুড়ার পাইকারি বাজারগুলোতে কমেছে সব ধরনের সবজির দাম। এছাড়া পণ্য পরিবহনে সরকারিভাবে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনের চাপে ট্রাকও চলছে না।এ কারণে দূর-দূরান্ত থেকে সবজির পাইকারি ক্রেতারাও আসছে না । এখান থেকে পাইকারার সবজি কিনে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ অনান্য স্থানে বিক্রি করেন।
তবে, মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে সবজির এত কম দাম হলেও বগুড়া শহরের কাঁচা বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ২০ টাকা, মুলা ১০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, করলা ৫০ এবং কাঁচা মরিচ ৫০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শিবগঞ্জের টেপাগাড়ির কৃষক খোরশেদ বলেন, ‘মুলা, কাঁচা মরিচ, বেগুন, শসা জমিতেই নষ্ট হবে। তাই হাটে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু পাইকার কম থাকায় মুলা দুই টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ১০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করেছি। কোনো হরতালেও এত কম দামে বিক্রি করিনি।’

বগুড়া মাটিডালি গ্রামের ইয়াকুব আলী জানান, ‘কাল থেকে আর টমেটো তুলবো না। টমেটো পচে জমিতে পড়লে সার হবে। বিক্রি করলে লোকসান। কারণ পাঁচমণ টমেটো তুলতে দুইজন লোক লাগে।তাদের মজুরি দিতে হয় ৮০০ টাকা। এখন গাড়ি চলে না। সে কারণে ভ্যানে করে পাঁচমণ টমেটে মহাস্থান নিতে ৫০০ টাকা লাগবে। প্রতিকেজি টমেটো পাঁচ টাকা দরে বিক্রি করলে পাঁচমণ টমেটোর দাম আসে ১০০০ টাকা। এখানেই লস ৩০০ টাকা। এছাড়া একজন মানুষের খাওয়া দাওয়াসহ আরও ১০০ টাকা ধরলে মোট লোকসান হবে ৪০০ টাকা। আর টমেটো ক্ষেত থেকে না তুললে এক টাকাও লোকসান হবে না।’

মহাস্থান বাজারের আড়ৎদার মোস্তাফিজার রহমান জাগো নিউজকে বলেন, মহাস্থান কাঁচা বাজারকে ঘিরে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটসহ বেশ কিছু বড় শহর ও স্থানীয় এবং অনান্য জেলার দুই থেকে তিন হাজার পাইকার আসে। আজ এই হাটে ২০০-৩০০ পাইকার এসেছে। যে পরিমাণ সবজি এসেছে তাতে এর চেয়ে বেশি দাম পাওয়া যাবে না।

তিনি বলেন, এবার শীতকালিন সবজির বেশ ভালো দাম পেয়েছে কৃষক। এবার সবজি বিক্রি করে কৃষক খুব খুশি। কিন্ত সপ্তাহখানেক ধরে এমন অবস্থা হয়েছে। ট্রাক, গাড়ি চলাচল নেই। কোথাও থেকে পাইকার আসতে পারছে না, তাই এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সূত্র: জাগো নিউজ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে