এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বগুড়ার সারিয়াকান্দির নারচী ইউনিয়নের কুপতলা গ্রামের মিজানুর রহমান মিঠু (৩৮) চাকরির পাশাপাশি কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন। ১২ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষাবাদ করে সফল হয়েছেন। ২ বছরে ৩০ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছেন। তার বাগানে কয়েকজন বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দির নারচী ইউনিয়নের কুপতলা গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে মিজানুর রহমান মিঠু গত ২০০৪ সালে সারিয়াকান্দি ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।
সংসারে অভাবের কারণে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বগুড়া শহরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। কয়েক বছর আগে পৈতৃক ১২ বিঘা জমিতে আধুনিক পদ্ধতিতে মালটার বাগান করেন। বাজার মূল্যের সঙ্গে টিকতে না পেরে তিনি বাগান তুলে দেন।
গত ২০২০ সালে ওই জমিতে ড্রাগন চাষাবাদ শুরু করেন। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে প্রতি পিস ৩০ টাকা দরে ২০ হাজার পিস ড্রাগন চারা কিনে এনে রোপণ করেছিলেন।
এখন ওই বাগানে লক্ষাধিক গাছ রয়েছে। ভালো ফল আসায় তিনি গত দুই বছর ধরে ড্রাগন বিক্রি করে আসছেন। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার ড্রাগন বিক্রি করেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় তার উৎপাদিত ড্রাগন বিক্রি হয়। বছরের মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জমি থেকে ড্রাগন উত্তোলন ও বিক্রি করেন।
মিজানুর রহমান মিঠু জানান, এভাবে একবার জমিতে ড্রাগন গাছ লাগিয়ে ১২ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। তবে বাজারে সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় তার উৎপাদন খরচ দিন দিন বাড়ছে।
ওষুধ, সেচ, পাহারা ও নিড়ানিসহ অন্যান্য খাতে প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। তবে খরচ বাদেও গত ২ বছর তিনি বেশ লাভ করেছেন। তার বাগানে ৪-৫ জন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সার্বক্ষণিক বাগান দেখভাল করেন মজিবুর রহমান মজিদ। তিনি বলেন, এ বাগানে কাজ করে মাসে ১৬ হাজার টাকা বেতন পাই। এ বেতনে ছোট সংসার ভালোভাবেই চলে।
মিঠু আরও বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির পাশাপাশি কৃষিকাজে আত্মনিয়োগ করে সফল হয়েছেন। প্রতি বছর ড্রাগন বাগান থেকে আয়ের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি ড্রাগন ২০০-২৭০ টাকা টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমে প্রতিটি গাছে দুই থেকে আড়াই কেজি পর্যন্ত ড্রাগন ফল পাওয়া যায়।
ড্রাগন চাষি মিঠু জানান, কেউ বিদেশি এ ফল চাষাবাদ করতে চাইলে তিনি তাকে সার্বিক পরামর্শ ও সহযোগিতা দেবেন।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল হালিম জানান, বর্তমানে পুরো এলাকায় ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে। একজনের দেখে অন্যজন বাগান করছেন। কৃষকরা বিদেশি এ ফল চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, মিঠুর মতো অনেক শিক্ষিত ও অর্ধশিক্ষিত যুবক এখন কৃষিকাজ এবং পশুপাখির খামার করে আর্থিকভাবে সফল হচ্ছেন।