বগুড়া : ভালোবাসার মূল্য দিতে হচ্ছে গরিব এক কলেজছাত্রকে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে সময় কাটছে তার। গরিব ঘরের সন্তান হয়ে বড়লোকের মেয়েকে ভালোবাসায় ওই ছাত্রকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে প্রেমিকার পরিবারের লোকজন।
শুধু তাই নয়, ওই মেয়ের দিকে যেন তাকাতে না পারে সেজন্য চোখে গুরুতর আঘাতও করা হয়েছে। ফলে ছাত্রটি হারাতে বসেছে ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি।
এমন নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের বারআঞ্জুল গ্রামে।
আহত কলেজছাত্রের নাম হেমেদী হাসান (২০)। তিনি উত্তরবঙ্গের ঐহিত্যবাহী প্রতিষ্ঠান সরকারি আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অনার্স প্রথমবর্ষের ছাত্র।
অর্থাভাবে তিনি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারছেন না।
স্থানীয়রা জানান, শিশু বয়সই বাবাকে হারান মেহেদী হাসান। একমাত্র ছেলেকে মানুষ করতে মা মর্জিনা বেওয়া দিনমজুরের কাজ করে সংসারের হাল ধরেন। মেহেদী হাসান মাকে সহযোগিতা করতে ও লেখাপড়ার খরচ যোগাতে পড়াশোনার পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।
মেহেদী হাসান অনার্সে ভর্তি হওয়ার পর প্রতিবেশী মামুনুর রশিদের মাদরাসা পড়ুয়া মেয়ের সাথে তার প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। গরিব পরিবারের সন্তান মেহেদী হাসানের ভালোবাসা মেনে নিতে পারেননি ধনাঢ্য মামুনুর রশিদ। তাই মেহেদীকে উচিত শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করেন মামুনুর রশিদ।
গত ৯ মার্চ সন্ধ্যার পর গ্রামের এক ব্যক্তির নামাজে জানাজা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন মেহেদী হাসান। মামুনুর রশিদ পথিমধ্যে তাকে টেনে হেঁচড়ে তার বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর মেহেদীর হাত-পা বেঁধে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ডান পা ভেঙে দেন। গুরুতর জখম করেন মাথায় ও চোখে। গ্রামবাসী রাতেই মেহেদীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান।
এ ঘটনা জানাজানি হলে ১০ মার্চ বৃহস্পতিবার গ্রামের শতাধিক নারী-পুরুষ মামুনুর রশিদের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় মামুনুর রশিদ স্ত্রী-কন্যা নিয়ে প্রতিবেশী এক বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে গ্রামের লোকজন ওই বাড়িও ঘেরাও করে। প্রতিবেশীর সহযোগিতায় মামুনুর রশিদের স্ত্রী ও কন্যা অন্যত্র পালিয়ে আত্মরক্ষা করে। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে মামুনুর রশিদকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, এ ঘটনায় চিকিৎসাধীন মেহেদী হাসানের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
১১ মার্চ, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম