মঙ্গলবার, ৩১ মে, ২০১৬, ০৮:৩৭:৫১

ফেসবুকে লাইক দেয়ায় চাকরি গেল শিক্ষকের

ফেসবুকে লাইক দেয়ায় চাকরি গেল শিক্ষকের

বগুড়া : বগুড়ার শেরপুরে ফেসবুকে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে কল্যাণী উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক বিপ্লব কুমারকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ম্যানেজিং কমিটি।

এ ব্যাপারে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, তিনি ফেসবুকে মহানবী (সা.)-কে কটূক্তি করে কিছু লেখেননি।  ‘বাংলাদেশ হিন্দু বীর যুব সংঘ’ নামে একটি আইডি থেকে আসা এ সংক্রান্ত লেখাটিতে শুধু তিনি লাইক দিয়েছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানা গেছে, বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের সিরাজনগর গ্রামের মৃত সুবোল চন্দ্র সরকারের ছেলে বিপ্লব কুমার ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর কল্যাণী উচ্চ বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

‘কৃষ্ণকুমার’ নামে একটি ফেসবুক আইডি আছে তার। সেখানে তিনি মহানবী (সা.) সম্পর্কে অশ্লীল মন্তব্য করেন।  

গত ২৯ মে স্কুলের নবম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম ও জোবায়ের আহমেদ এটি দেখে।  বিষয়টি তাদের মাধ্যমে প্রচার হলে স্থানীয় মুসলমানদের মাঝে প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখা দেয়।  

পরদিন সোমবার বেলা ১০টার দিকে এলাকাবাসী স্কুল চত্বরে সমবেত হন এবং শিক্ষক বিপ্লব কুমারের বিচার দাবি করেন।  

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম সরোয়ার জাহান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এবং শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. এরফান ঘটনাস্থলে যান।

ম্যানেজিং কমিটি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি সভা আহ্বান করে।  সভায় আলোচনা সাপেক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষক বিপ্লব কুমারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এ ঘটনায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নজরুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।  

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন স্কুলের শিক্ষক প্রতিনিধি বাশির উদ্দিন বিশ্বাস ও স্থানীয় কল্যাণী বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি আমিনুল ইসলাম মণ্ডল।  সাত কর্মদিবসের মধ্যে এ কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক সুদেব কুমার পাল জানান, এমএসসি পাস সহকারী শিক্ষক বিপ্লবের বিরুদ্ধে এর আগে এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।  তিনি যা করেছেন, নিজ দায়িত্বে করেছেন।

প্রধান শিক্ষক জানান, শিক্ষক বিপ্লব কুমার তাকে জানিয়েছেন, তিনি শুধু ওই পেজের লেখায় লাইক দিয়েছেন; কিছু লেখেননি।’

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, ওই শিক্ষক ‘বাংলাদেশ হিন্দু বীর যুব সংঘ’ পেজের একজন অনুসারী (ফলোয়ার)।  ওই পেজের মাধ্যমে তার আইডিতে আসা মহানবী (সা.)-কে কটাক্ষ করে লেখায় লাইক দিয়েছেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ঘটনার পর থেকে শিক্ষক বিপ্লব কুমারের ফেসবুক পেজ ‘কৃষ্ণকুমার’ ব্লক।  পেজের একটি ফটোকপিতে দেখা গেছে, তিনি ওই লেখাতে লাইক দিয়েছেন।  তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
৩১ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে