মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬, ০৪:২২:০৯

কল্যাণপুরের জঙ্গিদের সাথে যেভাবে একত্রিত হয় রিগ্যান

কল্যাণপুরের জঙ্গিদের সাথে যেভাবে একত্রিত হয় রিগ্যান

বগুড়া : রাজধানীর কল্যাণপুরে সোমবার রাতভর যৌথবাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন ৯ জঙ্গি নিহত হয়েছেন।  এ ঘটনায় আহত হয়ে আটক হয়েছেন একজন।  পালিয়ে গেছেন আরেকজন।

আহত সন্দেহভাজন জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যানকে (১৭) টিভিতে দেখে শনাক্ত করেছেন তার মা।  তিনি বগুড়া শহরের জামিলনগর গ্রামের মৃত রেজাউল করিমের ছেলে।

এ ঘটনায় বেলা আড়াইটার দিকে আহত জঙ্গি রিগ্যানের মা রোকেয়া বেগম ও বোন তানিয়া সুলতানাকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে বগুড়া সদর থানা পুলিশ।

রিগ্যানের মা রোকেয়া বেগম বগুড়া শহরের একটি ক্লিনিকে সেবিকা হিসেবে কাজ করেন।

আটকের পর রোকেয়া বেগম গণমাধ্যমকে জানান, রিগ্যান ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই কোচিং করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়।  পরদিন বগুড়া থানায় একটি জিডিও করা হয়।  সে শহরের রেটিনা কোচিং সেন্টারে মেডিকেল কোচিং করতো।

তিনি জানান, নিখোঁজ হওয়ার এক বছর হলো আজ। এ সময়ের মধ্যে বাড়ির কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ ছিল না তার।  আজ টিভিতে দেখে জানতে পারি- আমার ছেলে যৌথবাহিনীর অভিযানে আহত হয়েছে।

রোকেয়া বেগম জানান, নিখোঁজের পর জিডি করেছি। অথচ তাকে খুঁজে বের করতে পুলিশের কোনো ভূমিকা ছিল না।

রাজধানীর মিরপুর বাংলা কলেজের ভুয়া পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখিয়ে কল্যাণপুরের ‘জাহাজ বাড়ি’র ওই বাসায় ওঠে জঙ্গিরা।  ওই বাসা থেকে এ ধরনের বেশকিছু ভুয়া আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।  ওই বাসা থেকে রসায়ন ও পদার্থ বিজ্ঞানের বেশকিছু বই এবং জিহাদি মতাদর্শের কয়েক বস্তা বইও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তারা।

কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, নিহত জঙ্গিদের সবাই সচ্ছল পরিবারের সন্তান বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২৬ জুলাই মঙ্গলবার ভোরে কল্যাণপুরের ৫ নম্বর রোডের ৫ তলা ভবনে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হয়েছে।  

অপারেশন স্টর্ম-২৬ নামে প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযান চলে।  অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান এ খবর নিশ্চিত করেন।  জঙ্গিরা নিহত হওয়ার পর পুলিশ অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে।

র‌্যাব-পুলিশের অন্তত এক হাজার সদস্য অভিযানে অংশ নেন।  সোমবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভবন ও তার আশেপাশের এলাকা ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়।  

ওই ভবনে ১১ জন জঙ্গি ছিল।  এর মধ্যে সোমবার রাতে ভবনে ঢোকার সময় পুলিশের গুলিতে আহত এক জঙ্গিকে আটক করা হয়।  একজন পালিয়ে যায়।

কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে আটজনের পরিচয় মিলেছে।  অভিযানের সময় গুলিবিদ্ধ আটক যুবকই আটজনের পরিচয় জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশের একটি সূত্র।

নিহতরা হলেন রবিন, অভি, আতিক, সোহান, ইমরান, তাপস, ইকবাল ও সাব্বির।  তবে অপর আরেকজনের পরিচয় জানাতে পারেনি গুলিবিদ্ধ যুবক।

আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টায় সাংবাদিকদের জানান, হাসান (২০) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়।  রাত সাড়ে ১২টার দিকে অভিযানের সময় রাজধানীর কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পাঁচ নম্বর সড়কের জাহাজ বিল্ডিংয়ের চারতলা থেকে দুই যুবক লাফিয়ে পড়ে। পরে পুলিশের গুলিতে আহত হয় যুবক।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জঙ্গিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ও ককটেল নিক্ষেপ করে।
২৬ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে