চট্টগ্রাম থেকে : একসঙ্গে বাঁচতে চেয়েছিলেন ওরা দুইজন। ভালোবাসার দম্পতি। ভীষণ ভালোবাসতেন একে অপরকে। কিন্তু কে জানতো তাদের সেই সুখের সংসার তছনছ হয়ে যাবে হঠাৎ লাগা আগুনে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে যন্ত্রণায় শেষমেশ হার মানেন স্বামী-স্ত্রী জুটি।
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজীপাড়ায় গতকাল রোববার ভোররাতে ঘটেছে এমনি হৃদয়বিদারক ঘটনা। রান্নার চুলার আগুনে পুড়ে স্বামী-স্ত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
অগ্নিদগ্ধ হওয়া নিহত স্বামীর নাম মো. সৈয়দ আহমদ (৩৫) ও স্ত্রী রীনা আক্তার (২৮)। এ ঘটনার পর গতকাল সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. সামশুল আরেফিন। এই সময় তিনি আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির নায়েক মো. হামিদ জানান, বাকলিয়া থানার শাহজীপাড়ায় আগুনে তিনটি বসতঘর পুড়ে যায়। ভোর রাতে আগুন লাগার সময় সবাই ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল। আগুনের ধোঁয়া দ্রুত সময়ের মধ্যে চার পাশে ছড়িয়ে পড়ায় কেউ ঘর থেকে দ্রুত বের হতে পারেনি। যে কারণে ধোঁয়ায় গুরুতর আহত হন সৈয়দ আহমদ ও রীনা আক্তার। পরে তাদেরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
কালুরঘাট ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র অফিসার অতীশ চাকমা বলেন, শাহজীপাড়ায় রান্নার চুলা থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এতে নূর হোসেন, আনোয়ার ও সেকান্দর নামে তিন মালিকের তিনটি বসতঘর? পুড়ে যায়। খবর পেয়ে কালুরঘাট ও লামারবাজার ফায়ার স্টেশনের দুটি ইউনিটের চারটি গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় একঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আগুনে তিন লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান, আগুনের ধোঁয়ার কারণে ঘর থেকে বের হতে পারেননি মো. সৈয়দ আহমদ ও রীনা আক্তার দম্পতি। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
প্রতিবেশীরা জানান, ঘুমন্ত অবস্থায় থাকায় ওই এলাকার অনেকে ঘর থেকে বের হতে পারেননি। যখন আগুন লাগে তখন সৈয়দ আহমদ ও রীনা আক্তার এক ঘরে ছিলেন। তাদের শিশুপুত্র ছিলেন পাশের ঘরে। মুহূর্তের মধ্যে দাউ দাউ করে আগুন ছড়িয়ে পড়ার পর চিৎকার শুরু হয়।
মোহাম্মদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ধারণা করছি রান্নার চুলা থেকে আগুন লেগেছে। তবে আগুনের ভয়াবহতা ছিল মারাত্মক। যে কারণে ঘুমন্ত মানুষজন বাসা থেকে বের হতে পারেনি।
ইয়াকুব আলী নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, ভোর সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে আগুন লেগেছে। এই সময় অনেকে ফজরের শেষ রাতের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠেন। তবে যারা আগুন দেখতে পান তারা ধোঁয়া দেখে আঁচ করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়। এমজমিন
১৯ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসবি