নিউজ ডেস্ক: রাঙ্গামাটিতে পাহাড়ধসের ঘটনার তৃতীয় দিনে এক সেনা সদস্যসহ আরো দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এ জেলায় পাহাড় ধসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১০৮ জন। নিহতদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শহরের মানিকছড়ি এলাকায় পাহাড় ধ্বংসস্তুপে উদ্ধার অভিযানে নামে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাংলাদেশ স্কাউটস খাগড়াছড়ি জেলা রোভারের সাত সদস্যের বিশেষ টিম। এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ পাওয়া যায় সেনাসদস্য আজিজুরের মৃতদেহ। প্রায় ১২ ফুট মাটির নিচে মাটি খুঁড়ে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। শহরের ভেদভেদীর রেডিও সেন্টার এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে আগত ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মাটি কেটে উদ্ধার করে এ সেনাকে।
নিহতদের নামের তালিকা-
রাঙ্গামাটি সদর: মেজর মাহফুজ, ক্যাপ্টেন তানভীর, কর্পো আজিজ, সৈনিক মো. শাহীন ও মো. আজিজুর রহমান (২০), নাইমা আক্তার (০৬), রমা আক্তার (২৫), নুরী আক্তার (০৩), হাজেরা বগেম, সোনালী চাকমা, অমিয় চাকমা (১০), আইয়ুশ মলিক (২), চুমকী মলিক(২২) স্বামী লটিন মলিক (২৮), মিল্টন/মিন্টু ত্রিপুরা (৪৫), মলি চাকমা (৫৫), ফেন্সী চাকমা, মাহবুব আলম (৫০), মো. শাহীন (২৫), হরিনবী চাকমা, সীমা চাকমা (৩২), সুজন চাকমা (৭), বন্যা চাকমা (৩), জুরি চাকমা (১০), মো. কামাল (৩০), মো. আব্বাস আলী (৫৫), শাহ আমাল (৫৫), মো. শফিকুল ইসলাম (২৫), প্রিয়তোষ চাকমা, মায়াধন চাকমা, মধুমিতা চাকমা (৩৫), সুমন দাশ, (২৫), জয়িতা (৪০) হলি আনসার সদস্য সবুরি বেগম (৩৫) বৃষ্টি (০৭), ব্রিগেড মালী আব্দুল জলিল (৪০), ৩০৫ সদর আনসার ব্রিগেড রাঙমাটি, মো. শরীফ(২৫), রনা বেগম (১৭), সোহাগ (১৪), কমলা বেগম (২১), সুজিতা চাকমা (৩২), সৌম্য চাকমা (৫), কমো চাকমা (৩৫), কনি মনি চাকমা (৭২), প্রিয়তম চাকমা (১২), বিপুল চাকমা (৩০), রপালী চাকমা (৩৫), জুই মনি চাকমা (১৪), জুমজুমি চাকমা (০৪), কেসানাচাকম(৩৫), সান্তনা চাকমা (৬), করিন দেওয়ান (৩৫), হ্যাপি চাকমা (৩৫), তৃষা মনি চাকমা (১৭), জয়েস চাকমা (০৯)।
কাউখালী উপজলো: বৈশাখী চাকমা(৭), মো. ইসাহাক মিয়া (আশিক) (৩০), মো. মনির (৩০), আব্দুর রশিদ, কাশখালী, ফাতেমা বেগম (৬০), অংচিং মারমা (৫২), অংচাংপ্রু মারমা , রাউজান ঘোনা, আশেমা মারমা (৩৪), তমো মারমা (১২), ক্যাথাইচিং মারমা, নুসুমা বগেম, নুরজাহান বেগম (৩০), দবির উদ্দিন, (৯০) মনিবালা চাকমা (৫০) বৃষমোহন চাকমা (৪০), নিশি চন্দ্র চাকমা, (৬০), লায়লা বগেম (২৮), খোদেজা বেগম (৫০), শোভা রানী চাকমা (৫৫), লাইপ্রু মারমা (৬৫), কমল ধন চাকমা (২৭), নমিতা চাকমা,(২১), সোহেল চাকমা (৭), মো. আবদুর রশীদ (৫০), তৃষ্ণা মনি চাকমা (১১), পিতা ফুল মোহন চাকমা।
কাপ্তাই উপজলো: নোমান (৫), রবি (২১), নুরন্নবী (৫০), রমজান আলী (৫), আবুল হোসেন (৩২), রবি তঞ্চঙ্গ্যা (৩৩), উচিংনু মারমা (৪০), নিতুই মারমা (৬), রোহান (৭), চামাউ মারমা (২৫), অং এম্রপ্রু মারমা (৪৫), আই প্রু মারমা (১৫), চিং মিউ মারমা ( ১৫), প্রানুটচিংমা (৬), মো. ইকবাল (৩৪), উবাইনমা মারমা (৬২), মংনু মারমা (৫৭)। বিলাইছড়ি উপজলোর মো. শহীদ, রেঞ্জু ও জুরাছড়ি উপজলোর চিত্রাঙ্গমুখী চাকমা (৫০), বিশ্বমনি চাকমা (১০)।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিগুলোর মধ্যে রয়েছে-ক্ষয়ক্ষতি নির্বাপন কমিটি, ত্রাণ বিতরণ কমিটি, উপদেষ্টা কমিটি, আশ্রয় কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি, সার্চ কমিটি ও পুনর্বাসন কমিটি।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারল মান্নান জানান, রাঙ্গামাটিতে এখনো আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃষ্টি শুরু হলে আবারো পাহাড় ধ্স হতে পারে। এর জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্তকতামূলক মাইকিং অব্যাহত রাখা হয়েছে। রাঙ্গামাটি শহরে ১৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কমিটিগুলো কাজ করবে। আর ক্ষয়ক্ষতি নির্বাচন কমিটির সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার কথা রয়েছে। আপাতত পাহাড়ধসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিরূপণ সম্ভব হয়নি।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. জসীম উদ্দীন জানান, এখনো ৫-৬ জন নিখোঁজ আছেন বলে স্থানীয়রা দাবি করছেন। সেই অনুযায়ী উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এমটিনিউজ২৪/টিটি/পিএস