চট্টগ্রাম : রোহিঙ্গাদের নাস্তিক বানানোর চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফি। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরীর লালদিঘি মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ দাবি করেন।
হেফাজত আমির বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নাস্তিক বানানোর চেষ্টা চলছে। আপনারা খুবই সর্তক থাকবেন। এদের গ্রামে গ্রামে যেন মসজিদ-মাদ্রাসা হয় সেই দিকে চেষ্টা করবেন। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন।’
রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, নির্যাতন এবং তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিতে এই সমাবেশের ডাক দেয় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেফাজত আমির।
শাহ আহমদ শফি বলেন, ‘রোহিঙ্গা মুসলামকে আল্লাহ তুমি হেফাজত করো। তাদের ছেলে-মেয়ে, পরিবারকে হেফাজত করো। আমাদের ঈমানকে রক্ষা করো।’
সমাবেশে হেফাজত মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে তাতে প্রমাণিত হয়, সু চি এখন আর্ন্তজাতিক জঙ্গি এবং সন্ত্রাসী। আদালতের কাঠগড়ায় তাকে দাঁড় করাতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমার দাবি, কুটনৈতিক উপায়ে সু চি সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করুন। তা না হলে কূটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্ন করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘জিহাদ ছাড়া উপায় নেই। জিহাদ ছাড়া শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না। আমরা জিহাদের জন্য প্রস্তুত আছি। ১৯৪৮ সাল থেকে ৯০ সাল পর্যন্ত রোহিঙ্গা মুসলমানরা মিয়ানমারে নির্বাচন করেছে, এমপি, মন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছে। তারা যদি ওই দেশের নাগরিক না হয়, তাহলে তারা কিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সেই দেশে ফিরিয়ে নিতে হবে।’
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির শাহ মহীবুল্লাহ বাবুনগরী, নায়েবে আমির নুর হোসেন কাশেমী, আব্দুল হামিদ, আব্দুল মালেক হালিম, হাফেজ আতা উল্যাহ, যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ, সলিম উল্যাহ, জুনায়েদ আল হাবীব, জাফর উল্যাহ খান, সাজেদুর রহমান, মইনুদ্দিন রুহী, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদি, ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি মামুনুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত আমিনী প্রমুখ।
মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘গণহত্যার মধ্য দিয়ে, গণহত্যার শিকার হওয়ার মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের ঐতিহাসিক দায় হচ্ছে গণহত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আমরা গণহত্যার মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছি, তাই যারা গণহত্যার শিকার হয়েছে তাদের আবেগ-অনুভূতি আমরাই বেশি বুঝবো।’
তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, রাশিয়া-চীনসহ আরও কয়েকটি দেশ মিয়ানমারের কথায় গণহত্যার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, চীন-রাশিয়া-মিয়ানমারের ঐক্য মূলত সাম্প্রদায়িক ঐক্য। আমরা বলতে চাই, তাদের ঐক্য গণহত্যার পক্ষে ঐক্য। এই ঐক্য ভাঙতে হবে। জাতিসংঘের মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক অবরোধের ডাক দিতে হবে। অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে হবে।’
যুগ্ম মহাসচিব সলিম উল্যাহ বলেন, ‘ভারত ও চীন মিয়ানমারে সংখ্যালুঘু সম্প্রদায়ের ওপর জুলুম নির্যাতনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। তারা যদি সংখ্যালঘুদের ওপর এই হত্যা বন্ধে এগিয়ে না আসে, তবে সারা বিশ্বে সংখ্যালঘুদের ওপর জুলুম নির্যাতন শুরু করা হয়, তার দায়-দায়িত্ব তাদের নিতে হবে।’
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস