নিউজ ডেস্ক: পার্বত্য রাঙামাটি জেলার দুর্গম এলাকার বাসিন্দা সংকটাপন্ন প্রসূতি সোনাপতি চাকমাকে (২০) বাঁচাতে সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারে করে এনে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করেছে। চিকিৎসাসেবাবঞ্চিত ওই সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের আর্তমানবতার সেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করল সেনাবাহিনী। তবে মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে গর্ভের সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি চিকিৎসকরা।
চট্টগ্রাম সিএমএইচের চিকিৎসক কর্নেল ডা. করিম বলেন, ‘পার্বত্য রাঙামাটি জেলার দুর্গম বগাখালী সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দা সোনাপতি চাকমা ও তাঁর সন্তানকে বাঁচাতে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।’
সোনাপতি চাকমার স্বজনদের বরাত দিয়ে তিনি জানান, প্রায় ৪৮ ঘন্টা ধরে সোনাপতির রক্তক্ষরণ হয়েছে। এ ছাড়া মায়ের পেটে বাচ্চার অবস্থান ছিল আড়াআড়ি। স্থানীয়ভাবে তাঁরা চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর সোমবার বেলা ১১টায় দুমদুমাইয়া বিওপিতে বিজিবির কাছে আসেন চিকিৎসাসেবা নিতে। বিজিবির চিকিৎসক পরিস্থিতি জটিল দেখে বিজিবি ৪১ ব্যাটালিয়নের সহায়তা চান। এর পর বিজিবির পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীর কাছে জরুরি চিকিৎসাসেবা চাওয়া হলে চট্টগ্রাম থেকে হেলিকপ্টার পাঠানো হয় এই মাকে বাঁচাতে। চট্টগ্রাম থেকে হেলিকপ্টার গিয়ে এক ঘন্টার মধ্যে রোগী নিয়ে চট্টগ্রাম পৌঁছে চিকিৎসক দল। এর পর সোনাপতি চাকমার অস্ত্রোপচার করা হয় সিএমএইচে।
পার্বত্য রাঙামাটির জুরাছড়ির ৪ নম্বর দুমদুমাইয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শান্তিরাজ চাকমা সোনাপতি চাকমার স্বজনদের সঙ্গে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে আসেন। স্বজনদের মধ্যে তিনিই একমাত্র বাংলা ভাষা জানেন।
তিনি বলেন, ‘দুদিন আগে সোনাপতি চাকমার প্রসববেদনা উঠে। স্থানীয় ধাত্রীদের মাধ্যমে অনেক চেষ্টা করা হয়। পরে তাঁরা ব্যর্থ হলে সোমবার সকালে বিজিবির চিকিৎসককের শরণাপন্ন হই। বিজিবির কর্মকর্তারা দ্রুত সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর পর আমাদের হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন সেনা সদস্যরা।’
চট্টগ্রাম সেনানিবাসের কর্মকর্তারা জানান, অসুস্থ সোনাপতি চাকমার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী। পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সিএমএইচে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে তাঁকে।