নিউজ ডেস্ক : সুপ্রিয় দে নামের এক যুবকের সঙ্গে ২০০৯ সালে ১৩ই মার্চ বিয়ে হয় পিংকী বড়ুয়ার। স্বামী স্কুলশিক্ষক। ভদ্র বলেই মনে করেছিলেন সবাই। কিন্তু বিয়ের পর জানতে পারলেন স্বামীর স্থানে থাকা ব্যক্তিটি ছাত্রীদের সঙ্গে অপ্রীতিকর মেলামেশায় লিপ্ত হন। বিষয়গুলো দৃষ্টিগোচর হলে তাকে এসব কুকর্ম থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন পিংকী।
এতেই খড়গ নেমে আসে তার ওপর। অমানবিক নির্যাতন ও যৌতুক দাবি করে স্বামী। নির্যাতনের ফলে গর্ভাবস্থায় তার একটি সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে গতকাল বুধবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই নিজের দাম্পত্য জীবনের কষ্টগাঁথা কাহিনী তুলে ধরছিলেন পিংকী। চোখে তখন তার জল।
এই সময় সম্মেলনে পিংকী বড়ুয়া মারধরের পর শিক্ষক স্বামী পুলিশের সহায়তায় হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তার অভিযোগ, যৌতুকের দাবিতে মারধরের পর স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতন মামলা দায়ের করার অপরাধে পালটা অপহরণ মামলা দিয়ে তাকে ও তার পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে। হয়রানির ভয়ে তার পরিবারকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে পিংকি বড়ুয়া বলেন, ২০০৯ সালে ১৩ই মার্চ তৎকালীন খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সুপ্রিয় দে খাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় তার। যিনি বর্তমানে বান্দরবান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আছেন। স্বামীকে এসব থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করলে সে আমার ওপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতন ও যৌতুক দাবি করে। নির্যাতনের ফলে গর্ভাবস্থায় আমার একটি সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। ২০১৪ সালে পরিবারের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দেই। এতেও সন্তুষ্ট না হয়ে গত এক জানুয়ারি মারধর করে আমাকে ঘর থেকে বের করে দেয়।
পিংকির বাবা স্বপন বড়ুয়া বলেন, ‘আমি খাগড়াছড়ি সদরের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এ ব্যবসার টাকায় আমার পরিবার চলে। মামলা দেয়ার পর থেকে দোকান বন্ধ। ঘরে তালা দিয়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’
পিংকি বড়ুয়া বলেন, ৬ই জানুয়ারি নারী ও শিশু ট্রাইবুন্যালে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। ২১শে জানুয়ারি আমার বাবা, মা ও ফুফাতো ভাইকে আসামি করে বান্দরবান থানায় একটি অপহরণ মামলা করা হয়। ২৩শে জানুয়ারি রাতে চান্দগাঁও থানার ফরিদারপাড়া এলাকার আমার ছোট ভাইয়ের বাসা থেকে ডিবি পুলিশ মাইক্রোবাসে করে বান্দরবান নিয়ে যায়। একইদিন আমার ফুফাতো ভাই উৎপল বড়ুয়াকেও গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। আমাদের পুলিশ হেফাজতে না রেখে একটি গেস্ট হাউজে নিয়ে যায়। যেখানে অপরিচিত সাত-আটজন লোক বিভিন্ন হুমকিধমকি ও মানসিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে।
আদালত থেকে বের হয়ে আসার সময় সুপ্রিয় দে’র ভাড়াটে লোকজন মামলা তুলে না নিলে বিভিন্ন হুমকিধমকি দিতে থাকে। এরপর থেকে হয়রানির ভয়ে পুরো পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
২৮ জানুয়ারি,২০১৬/এমটিনিউজ/এসএস/এসবি