চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহতের ঘটনায় ৩টি মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে পুলিশ বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় মামলা দায়ের করেছে।
এর মধ্যে নিহত তিনজনের পরিবার দুটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আর সরকারি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে অন্য মামলাটি দায়ের করেছে পুলিশ।
বাঁশখালী থানার ওসি স্বপন কান্তি মজুমদার মঙ্গলবার বলেন, পুলিশের মামলাটির বাদী থানার এসআই বাহার মিয়া। ৫৭ জনের নাম উল্লেখ করে এ মামলার আজাহারে অজ্ঞাতপরিচয় তিন হাজার দুইশজনকে আসামি করা হয়েছে।
সংঘর্ষে মরতুজা আলী ও আংকুর মিয়া নিহতের ঘটনায় অংকুরের বড়ভাই মৌলভী বশির একটি হত্যা মামলা করেছেন। এতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় দেড় হাজার লোককে আসামি করা হয়েছে।
অন্য হত্যা মামলাটি করেছেন নিহত জাকির হোসেনের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। তার মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত মো. জাকেরের (৫৫) পরিবার এখনো কোনো মামলা করেনি বলে জানান ওসি।
সোমবার বিকালে বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনা এলাকায় এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতায় স্থানীয়রা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে চারজন নিহত হন, আহত হন পুলিশসহ কমপক্ষে ১৯ জন।
কয়লাভিত্তিক বেসরকারি ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি নেওয়াকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ ছিল। তবে একটি অংশ ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে অবস্থান নিলে দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতাকারীরা সোমবার ‘বসতভিটা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিলে অন্য পক্ষও পাল্টা সমাবেশ ডাকে। উত্তেজনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি এ কে এম এমরান ভুইয়া বলেন, দুপুরে ওই এলাকায় পুলিশ অবস্থান নিলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। পুলিশ চলে আসতে চাইলে রাস্তা অবরোধ করে হামলা চালায় তারা।
এসময় বিক্ষুব্ধরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালায় দাবি করে এমরান বলেন, পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। দু’পক্ষের গোলাগুলিতে সাত পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। আহতদের মধ্যে চার পুলিশসহ ১১ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ সদস্যদের ওই এলাকায় নিয়মিত টহল দিচ্ছে। জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন তদন্ত কমিটি গঠন করার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে সৃষ্ট বিরোধে পুলিশ, আনসার এবং স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
০৫ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএস