চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে ভুল চিকিৎসায় বিচারকের স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় ধরা খাচ্ছেন ৩ চিকিৎসক। এ ঘটনায় দুই চিকিৎসকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম হারুনুর রশিদ এ পরোয়ানা জারি করেন।
যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা.কাজল রেখা রায়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কার্ডিয়াক সার্জারির রেজিস্ট্রার ডা. দেবাশীষ তালুকদার এবং নগরীর পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জব্বার।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৭ মার্চ নোয়াখালীর সহকারী জেলা জজ মোরশেদুল আলমের সঙ্গে সায়মা শিকদারের (২২) বিয়ে হয়। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় সন্তান প্রসবকালে ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের অবহেলায় মারা যান সায়মা শিকদার।
হতভাগ্য সায়মা চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সম্মান চতুর্থবর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২ জুন নগরীর কেবি ফজলুল কাদের চৌধুরী রোডে পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন সায়মা শিকদার। ডা. কাজল রেখা রায়ের পরামর্শে তাকে ওই ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
জানা যায়, রাত দুইটার দিকে সিজারিয়ানের মাধ্যমে সায়মা একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন তিনি। কিন্তু অপারেশন পরবর্তী সঠিক পরিচর্যা ও অবহেলার কারণে সায়মার অবস্থার অবনতি হয়। তাকে ৩ জুন সকাল সাতটায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মেট্রোপলিটন হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার পরিবারকে জানান, মেট্রোপলিটন হাসপাতালে আনার এক ঘণ্টা আগেই মারা গেছেন সায়মা।
মামলার এজাহারে সায়মার মা সালমা বেগম অভিযোগ করেছেন, ডা. কাজল রেখা রায়ের তত্ত্বাবধানে সায়মার চিকিৎসা চলছিল। তার সন্তান প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল ২০ জুন। কিন্তু কাজল রেখার পরামর্শে তারা সায়মাকে হাসপাতালে ভর্তি করা।
তিনি বলেন, সিজার অপারেশন করা হলেও অপারেশন পরবর্তী সঠিক পরিচর্যা ও চিকিৎসার অবহেলার কারণে তার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে তার মেয়ের মৃত্যু হলেও তারা গোপন করেন। এতেই বোঝা যায়, তার মেয়ের চিকিৎসায় অবহেলা ও ভুল ছিল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আরেফিন রিজভি বলেন, নরহত্যা ও পেশাগত অবহলোর অভিযোগে দণ্ডবিধির ৩০৪, ৩০৪ (ক) এবং ৩৪ ধারায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
৯ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম