চট্টগ্রাম : প্রতিদিন সকাল ৭টায় পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সন্তান মাহিরকে বাসা থেকে স্কুলবাসে তুলে দিতেন পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দাম। এদিন সাদ্দাম না আসায় নিজেই ছেলেকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
ওইদিন সকাল ৬টা ২০ মিনিটে বাসা থেকে বের হন তিনি। কেন তিনি নির্দিষ্ট সময়ের ৪০ মিনিট আগে বাসা থেকে বের হলেন- এর কারণ খুঁজছে পুলিশ।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, হত্যাকাণ্ডের দিন নির্ধারিত সময়ের আগেই মাহমুদা বাসা বেরুনোর তথ্য দুর্বৃত্তরা জানতো।
মিতুর পরিবারের সূত্রমতে, একটি এসএমএস পেয়েই নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাসা থেকে বের হন মিতু। ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়, রোববার আগেভাগে স্কুল শুরু হবে এমন নির্দেশনা দিয়ে স্কুল থেকে কোনো এসএমএস পাঠানো হয়নি। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তার মোবাইল ফোনটিও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায় পুলিশ।
দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, তিনি সাধারণত ৭টায় বের হন। সেদিন কেন তিনি সাড়ে ৬টায় বের হলেন বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, মাহমুদা খানম মিতুর মোবাইলে কোনো এসএমএস আসেনি।
যদিও ঘটনার দিন বাবুল আক্তারের বাসায় একাধিক প্রতিবেশী জানিয়েছিলেন, বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু শনিবার এক এসএমএস সূত্রে জানতে পারেন রোববার থেকে স্কুলে অ্যাসেম্বলি হবে এবং মিতু এটি তাদেরও জানিয়েছিলেন।
এদের একজন বলেন, মাহির আক্তার নগরীর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে পড়ে। ওই স্কুলে আমার ছেলেও পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। স্কুল শুরুর সময় সকাল ৮টা হলেও শনিবার রাতে ভাবী আমাকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, তাকে স্কুল থেকে এসএমএস পাঠানো হয়েছে। রোববার স্কুলে অ্যাসেম্বলি হবে।
তাই মাহিরকে ৭টা ২০ মিনিটে স্কুলে পৌঁছাতে হবে। ভাবী ছেলেকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসতে ৬টা ৩০ এর দিকে বাসা থেকে বের হন।
গত রোববার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার জিইসির মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, মিতুকে হত্যার পর তিনজনকে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যেতে। ওই ঘটনার পর একটি কালো মাইক্রোবাসও ঘটনাস্থল ছেড়ে যেতে দেখা যায়। ওই মাইক্রোবাসটিকে বুধবার রাতে আটক করা হয়েছে। এদিকে মিতুর ছেলে মাহিরও তিনজনের কথা বলেছিল।
পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে যারা হত্যা করেছে সরাসরি তা দেখেছেন বলে মাইক্রোবাসচালক জানে আলম জানিয়েছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর হত্যাকাণ্ড সরাসরি প্রত্যক্ষ করে কেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তিনি অবহিত করলেন না?
৯ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম