শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬, ১২:৩৫:১৩

৪০ মিনিট আগে কেন বের হলেন বাবুল আক্তারের স্ত্রী?

৪০ মিনিট আগে কেন বের হলেন বাবুল আক্তারের স্ত্রী?

চট্টগ্রাম: দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বাসা থেকে বের হতেন সকাল ৭টায়। কিন্তু ঘটনার দিন তিনি কেন ৪০ মিনিট আগে বেরিয়ে ৬টা ২০ মিনিটে স্বল্প দূরত্বের জিইসি মোড়ের উদ্দেশ্যে রওনা করলেন তার জবাব খুঁজছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের সন্তান মাহিকে প্রতিদিন স্কুলে নিয়ে যেত কনস্টেবল সাদ্দাম। যেদিন মিতুকে হত্যা করা হয় সেদিন সে বাড়িতে আসেনি। আর পুরো এই বিষয়টি আগে থেকে জানতো সন্ত্রাসীরা। নগর গোয়েন্দা পুলিশ বাসা থেকে সন্তানকে নিয়ে মিতুর আগে বের হওয়া ও ওই দিন পুলিশ কনস্টেবল সাদ্দামের না আসার বিষয়টি তলিয়ে দেখছে। অনেকটা নিশ্চিত হয়েছেন যে, এই দুটি বিষয় আগেভাগে জানার কারণেই খুনের ছক কষে সাহসী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রীকে ৫০ সেকেন্ডের মধ্যে হত্যা করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় ৩ সন্ত্রাসী।

এই বিষয়ে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, মিতু ৪০ মিনিট আগে কেন বের হলো তা রহস্যজনক। কারণ তার বাসা থেকে জিইসি মোড়ের দূরত্ব ১০০ গজ। সেখানে তিনি কেন নির্ধারিত সময়ের এত আগে বের হবেন তা একটু খটকা লাগছে। তা ছাড়া একজন পুলিশ সদস্য তার সন্তানকে স্কুলে নিয়ে যেতেন তাও নজর রাখছিল দুর্বৃত্তরা। মাইক্রোবাসে কারা ছিল? হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, সেখানে পালিয়ে যাওয়া বহনকারী সন্ত্রাসীদের মোটরসাইকেলটির পেছন আরেকটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস চলে যায়। মোটরসাইকেলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় গভীর রাতে উদ্ধার করা গেলেও এর চালককে এখনো আটক করা যায়নি। তবে মাইক্রোবাসটি শনাক্তের পর ধরা পড়েছে এর চালক জানে আলম। জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে গাড়িতে বসে ঘটনার দিন খুন হওয়ার দৃশ্য খুব কাছ থেকে দেখেছে। তবে ওই মাইক্রোবাসে আর কারা কারা ছিল তা পুলিশকে জানানোর পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এখনি তাদের নাম তদন্তের স্বার্থে প্রকাশ করতে রাজি নন বলে জানান অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য।

তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে আমরা অনেক ক্লু পেয়ে যাচ্ছি। আশা করছি সন্ত্রাসীরা ধরা পড়ে যাবে। প্রাথমিক ভাবে জানে আলম ওই দিন সকালে হত্যাকাণ্ডের সময় গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থল দিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করলেও এর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন।
আবু নসর গুন্নু কে? পুলিশ কমিশনার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া আবু নাসের গুন্নু নামের ব্যক্তিকে নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। ঘটনার দিন তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন তার মোবাইল ট্র্যাক চেক করে সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে শিবির নেতা বলে গ্রেপ্তার করে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তার পরিবার। বলেছে, সে পারিবারিক একটি মাজারের বিরোধের শিকার হয়ে এই রোষানলে পড়েছে।

একটি চক্র তাকে ফাঁসাতে নাম ব্যবহার করেছে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, নসর এক সময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিল। মধ্যপ্রাচ্য থেকে সে ফিরে এসেছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর আবু নসর গুন্নুকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তারে পর্যাপ্ত কাগজপত্র আদালতে দেখাতে না পারায় আগামী রোববার পর্যন্ত রিমান্ড শুনানি স্থগিত করা হয়েছে। এদিকে গতকাল বিকালে নসরকে নিরীহ দাবি করে দরবারে মুসাবিয়ার একটি পক্ষ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তার মুক্তি দাবি করেছে।-এমজমিন

১০ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে