চট্টগ্রাম : আসন্ন ঈদ সামনে রেখে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। এই সুযোগে কিছু দোকানিরা অতিরিক্ত মুনাফা আদায়ের চেষ্টা করছেন। তাই বলে ৫ হাজার টাকার লেহেঙ্গা ১০ হাজার টাকা! দ্বিগুণ দাম হাকলে শ্রীঘরে পাঠানো ছাড়া আর কিই বা উপায় থাকতে পারে।
ঈদে কাপড়ের বাজার স্থিতিশীল রাখতে পরিচালিত হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এর অংশ হিসিবে সোমবার ষোলশহর ২নং গেইট এলাকার চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান, মো. তৌহিদুল ইসলাম ও সানজিদা সুলতানা। এসময় দুইটি কাপড়ের দোকানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা কর হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চিটাগাং কমপ্লেক্সে শপিং অভিযান চলাকালে জিনিমিনি ও নাদিয়া এম্পোরিয়াম নামের তৈরি পোশাকের দুটি দোকানকে ট্যাগ ওভারপ্রাইসিং ও ক্রয় রশিদ দেখাতে না পারার অপরাধে এক লাখ টাকা করে মোট দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান বলেন, ফিক্সড প্রাইসের দোকান জিনিমিনি’তে একটি লেহেঙ্গার ক্রয়মূল্য ৪ হাজার সাতশত ৫০ টাকা কিন্তু বিক্রয় মূল্য ছিলো ৯ হাজার আটশত ৫০ টাকা। এছাড়া এ প্রতিষ্ঠান ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে ফিক্সড প্রাইসের ট্যাগ ছিড়ে ফেলে।
এ সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহায়তা প্রদান করেন ক্যাব ও চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিনিধি। পুলিশ ও ব্যাটলিয়ন আনসার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।
এর আগে নগরীর টেরী বাজার ও মিমি সুপার মার্কেটের অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় দুটি কাপড়ের দোকানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো-মিমি সুপার মার্কেটস্থ আর্কষন ও টেরী বাজারস্থ স্টার প্লাস।
রোববার সকালে অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান, অনুপমা দাস ও ইশ্তিয়াক আহ্মেদ । এ সময় তাদের সহায়তা দেন ক্যাবের সদরঘাট থানা শাখার সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস ও তৌহিদুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিনিধি মো. মোকাম্মেল হক খান। পুলিশ ও আনসারের সদস্যরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব তাহমিলুর রহমান বলেন, গত বুধবার হতে শুরু হওয়া এ অভিযানের প্রথম দিকে সবাইকে সর্তক করা হয়। সে সময় মিমি
সুপার মার্কেটস্থ ইয়ং লেডি ও টেরী বজারস্থ স্টার প্লাসে অতিমুনাফার ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদর্শনের ব্যর্থতার প্রমাণ পাওয়ার গেলেও তাদের পরবর্তীতে এরকম না করার শর্তে শুধুমাত্র সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আজকের অভিযানের সময় টেরী বাজারের এই দোকানটিতে (স্টার প্লাস) আবারো অতিমুনাফা অর্জনেরও প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের ৫৩৭০ টাকা ক্রয়মূল্যের লেহেঙ্গা ১১৮৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায় যা ক্রয়মূল্য থেকে ৬৪৯০ টাকা বেশী। ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদর্শনের ব্যর্থতা ও অতিমুনাফা অর্জনের প্রেক্ষিতে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় এই দোকানটিকে।
পরবর্তীতে মিমি সুপার মার্কেটে গেলে “ইয়ং লেডি” সহ অনেক দোকান প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদর্শন করে। তবে কাপড়ের দোকান ‘আর্কষন’ এ গিয়ে বিপুল মুনাফায় কাপড় বিক্রয় করতে দেখা যায়। এসময় দোকানটিকে ১৫৯০০ টাকা ক্রয়মূল্যের লেহেঙ্গা ৩৫৫০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়, যা ক্রয়মূল্য থেকে ১৯৬০০ টাকা বেশী!! এ দোকানে অধিকাংশ পণ্যেরই এমন উচ্চমূল্য লক্ষ করা যায়। ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদর্শনের ব্যর্থতা ও অতিমুনাফা অর্জনের প্রেক্ষিতে রেডিমেট কাপড়ের এই দোকানটিকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে ফইল্লাতলি বাজারে মূল্যতালিকা প্রদর্শন না করায় একটি দোকানকে ৫০০০ টাকা জরিমানা করা হয়। আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাব্বির রাহমান সানি। স্টিল মিল বাজারে মুন বেকারি তে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য প্রস্তুত ও পোড়া তেলে ইফতার তৈরী করায় ৩০ হাজার টাকা ও দুই দোকানে অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রয় করায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট ফোরকান এলাহী অনুপম।
২১ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এমএম