শুক্রবার, ২৪ জুন, ২০১৬, ০৭:৪০:৩৯

বাবুল আক্তারের সোর্সই হত্যায় জড়িত

বাবুল আক্তারের সোর্সই হত্যায় জড়িত

আহমেদ মুসা: চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় সরাসরি জড়িত সন্দেহে আবু মুছা (৪৫) ও এহতেশামুল হক ভোলা (৩৮) নামে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশের একটি ইউনিট। মুছাকে মঙ্গলবার সকালে চকবাজার এলাকা থেকে ও একইদিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাজাখালী গুলবাহার কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে দাবি করেছে এদের পরিবার। পুলিশের বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে, এরা দু’জনই এসপি বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করতেন।

বাবুল আক্তারের বসবাস ও পরিবার সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণা রয়েছে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ও প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিশ মনে করছে, তৃতীয় কোনো পক্ষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অর্থাৎ ভাড়াটে খুনি হিসেবে তারা মিতুকে হত্যা করেছে। এজন্যই তাদের আটক করা হয়। শিগগিরই তাদেরও গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে। তবে পুলিশ কর্মকর্তারা ভোলা ও মুছাকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এদের হত্যায় যুক্ত থাকার বিষয়ে সরাসরি কোনো কিছু না বললেও কর্মকর্তারা বলছেন, মিতু হত্যা তদন্ত নিয়ে শিগগিরই তারা ‘সুসংবাদ’দেবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভোলা একজন সন্ত্রাসী ছিলেন। এখন তিনি ৩৫ নম্বর বকশিরহাট ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা। আবু মুছা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। অনেক সময় ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেন। তার বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার রানীহাট এলাকায়। এসপি বাবুল আক্তারের হাতে একবার গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরে দু’জনই বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করছেন। পুলিশের ওই বিশ্বস্ত সূত্র আরও জানিয়েছে, ভোলা ও মুছাকে নগরীর বন্দর থানায় রাখা হয়েছে।

সূত্র জানায়, মিতুকে যে স্থানে হত্যা করা হয় সেই জিইসি মোড়ে বসানো টাওয়ারের অধীনে যেসব মোবাইল ফোন থেকে কল ইনকামিং-আউটিগোয়িং হয়েছে তা ঘেঁটেও মুছা ও ভোলার ফোন ব্যবহারের তথ্য পাওয়া গেছে। পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে মুছা ও ভোলার যোগসাজশ এবং ঘটনার সঙ্গে নানা কারণে তাদের সংশ্লিষ্টতা বিবেচনায় নিচ্ছে পুলিশ। এর মধ্যে মুছাকেই এ ঘটনার মূল হোতা হিসেবে দাবি করছে পুলিশের একাধিক সূত্র। তবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে জড়িত অন্যদেরও ধরার জন্য পুলিশ আটক দু’জনের ব্যাপারে মুখ খুলছে না।

ভোলার পরিবারের সদস্যরা জানান, মঙ্গলবার বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটের দিকে ভোলার মোবাইলে ফোন আসে। ওই প্রান্তে কি বলছেন তা না শুনলেও এ প্রান্ত থেকে ভোলা বলছিলেন, আজকে আমার তারাবিহ শেষ হবে (খতম তারাবিহ), আমি রাতে কোথাও যেতে পারব না। এরপর সে রাজাখালীর বাসা থেকে বের হয়। বাসা থেকে বের হয়ে শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন গুলবাহার কমিউনিটি সেন্টারের পাশে গেলে তাকে আটক করা হয়। আটকের পর রাতে বাকলিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও তা নেয়নি পুলিশ। পরে তারা সিএমপি সদর দফতর লালদীঘির পাড়ে ডিবি অফিসে যান। ভোলার স্ত্রী ও ভোলার বড় বোন রাবেয়া বসরী বকুল সারারাত ডিবি অফিসে কাটিয়ে দেন।

বুধবার সকালে সিএমপি পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহারের সঙ্গে সাক্ষাতের অনুমতি চেয়ে না পেয়ে তারা ফিরে যান। পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে ভোলাকে বন্দর থানায় রাখা হয়েছে। বুধবার বেলা ১২টার দিকে তারা বন্দর থানায় খোঁজ নিতে গেলেও ভোলার সঙ্গে দেখা করতে ব্যর্থ হন। বাকলিয়া থানার ওসি আবুল মনসুর বলেন, ভোলার বোন ও স্ত্রী থানায় খোঁজ নেয়ার জন্য আসছিলেন ভোলা গ্রেফতার হয়েছে শুনে। তবে তার কাছে এমন কোনো তথ্য না থাকায় তিনি তাদের ফিরিয়ে দেন। মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান  বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডে কাউকে আটক করা হয়েছে কিনা তা এখনও বলার সময় আসেনি।’ অন্যদিকে সিটি এসবির ডিসি মোয়াজ্জেম হোসেন ভুঁইয়া বলেন, ভোলা কিংবা মুছা নামে কাউকে তারা আটক করেনি। এ সম্পর্কিত কোনো তথ্যও নেই তাদের কাছে।-যুগান্তর

২৪ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে