চট্টগ্রাম : মিরসরাইয়ে এক অটোরিকশা চালককে হত্যার প্রায় ১২ বছর পর মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত দুই খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে। মঙ্গলবার রাত ১২ টা ১ মিনিটে দুইজনকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া দুই খুনি হলেন- মিরসরাই উপজেলার উত্তর হাজী সরাই গ্রামের লেদু মিয়ার বাড়ির কামাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম ওরফে শহীদ এবং একই উপজেলার মধ্যম সোনাপাড়া গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদ।
একই মঞ্চে দুই খুনির ফাঁসি রায় কার্যকর করতে কারা কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করেন জল্লাদ আব্দুল হান্নানের নেতৃত্বে পাঁচ জল্লাদ। তাদের জম টুপি পরিয়ে হাত-পা বেঁধে পাশাপাশি ফাঁসির মঞ্চে গলায় দড়ি লাগিয়ে দেন এই পাঁচ জল্লাদ।
ঘড়ির কাটায় ১২টা ১ মিনিটের ঘরে আসতেই জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মৌখিক আদেশে জেল সুপার ইকবাল কবির তার হাতে থাকা লাল রুমাল ফেলে দেন। তখন সঙ্গে সঙ্গেই ফাঁসির মঞ্চে থাকা জল্লাদরা তাদের হাতে থাকা লিভার টান দিলে ফাঁসিতে ঝুলতে থাকেন এই দুই খুনি। তার মিনিট দশেক পর সেখান থেকে নামিয়ে জেলা সিভিল সার্জন হাত ও পায়ের রগ কেটে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে ডেথ সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর করেন।
ফাঁসি কার্যকরের আগে রাত সাড়ে ১১টায় দুই খুনির তওবা পড়ান চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারা মসজিদের পেশ ইমাম মো. ইলিয়াছ আজম। এর আগে তাদের দুজনকে গোসল করানোর পাশাপাশি রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়। পরিবারের সদস্যদের সাথে শেষ সাক্ষাতেরও সুযোগ দেয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরবেলা স্বজনরা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পরই মূলত তাদের ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে কারা কর্তৃপক্ষ।
সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম কারাগারে প্রবেশ করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, নগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
আগে থেকেই ডিআইজি প্রিজন অসীম কান্তি পাল, জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী, জেলার মাহবুবুল ইসলামসহ কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এ ফাঁসির রায় কার্যকর করতে সন্ধ্যার পর থেকে কারা এলাকায় নেয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কারাফটকের সামনে মোতায়ন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ। কারাগারের আশপাশে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়। রাত ১০টার পর থেকে কারাগারের মূল ফটকের সামনে কাউকে অবস্থান করতে দেয়া হয়নি।
১৩ জুলািই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম