বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬, ০১:৩৩:০৪

ছাত্রলীগের অবরোধে অচল চবি

ছাত্রলীগের অবরোধে অচল চবি

চট্টগ্রাম : ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের অবরোধে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)। সদ্য ঘোষিত শাখা কমিটিতে স্থান না পাওয়ায় পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় শাটল ও ডেমু ট্রেন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গামী সব ধরনের পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে পদবঞ্চিতরা। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি বিভাগের ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে পদবঞ্চিতদের হামলায় ষোলশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার চট্টগ্রাম রেলস্টেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া সকাল সাড়ে ৭টার ট্রেনটি ঝাউতলা স্টেশনে পৌঁছালে তারা ট্রেনটি আটক করে দেয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে কোন ট্রেন যেতে পারেনি। পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশা অনুযায়ী পদ না পাওয়ায় আন্দোলনরত ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং সিটি মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজম নাসির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, সকাল পৌনে ৮টার দিকে নগরীর ঝাউতলা স্টেশনে ট্রেন আটকে শাটলের চালককে ধরে নিয়ে যায় পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ এসে শাটল চালককে উদ্ধার করে। এরপর ট্রেনটি ষোলশহর স্টেশনের অদূরে বন গবেষণাগার এলাকায় পৌঁছালে আবারও ট্রেন অবরোধের চেষ্টা করে পদবঞ্চিতরা। এসময় তারা ট্রেন থামাতে ইট-পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতকর্মীদের থামাতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে। কিন্তু তাতেও কাজ না হওয়ায় ট্রেনটি পুনরায় ষোলশহর স্টেশনে ফিরে যায়। পদবঞ্চিতদের হামলায় ষোলশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও সাধারণ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন।

ষোলশহর পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. হারুন বলেন, শাটল ট্রেন থামাতে ছাত্রলীগের কিছু কর্মী ইট-পাথর নিক্ষেপ করলে এসআই জাকির হোসেন আহত হন। তাকে নিয়ে এখন চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আছি। তবে পুলিশের ফাঁকা গুলি ছুড়া কথা তিনি অস্বীকার করেছেন।

ষোলশহর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, সকালে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী শাটল ট্রেনের চালকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করার পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলে ছাত্রলীগ কর্মীরা আবারও ট্রেন থামাতে ইট পাথর মারতে থাকে। এ জন্য সকাল থেকে কোনো ট্রেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে যেতে পারেনি।’

প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় ছাত্রলীগের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা দেয় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদ। ওইদিন কমিটি ঘোষণার পর পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশা অনুযায়ী পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলফটকে এক ঘন্টা তালা ঝুলিয়ে রাখে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং গেইট সরড় অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। এ সময় তারা বুধবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধের ডাক দেয়।
২০ জুলাই, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে