এমটিনিউজ ডেস্ক: চুয়াডাঙ্গায় জীবননগরে মেয়ের হাতে খুন হয়েছেন বাবা। ঘটনা উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের দেহাটি গ্রামে। নিহত ব্যক্তি দেহাটি গ্রামেরমৃত হোলাম হোসেনের ছেলে মতিয়ার রহমান (৫৫)। শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে তার গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় মেয়ে ময়না খাতুন (২৩) ও স্ত্রী তসলিমা খাতুনকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ।
খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত মেয়ে জানান, দীর্ঘদিন স্বামীর ঘরে অশাস্তি থাকায় বাবার বাড়ি বসবাস করছিলেন তিনি। এর মাঝে মেয়েকে বাবা অনৈতিক কাজের দেন। এ কারণে শনিবার ভোরে মা-মেয়ে মিলে ছুরি দিয়ে তাকে গলা কেটে হত্যা করেন।
মেয়ে ময়না বলেন, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে আমি আমার ঘরে শুয়ে ছিলাম। রাত ১১টার দিকে আমার বাবা আমাকে বাজে প্রস্তাব দেয়। আমি বাবাকে ধমক দিই। মাকে যেন কিছু না বলি তা বলে বাবা চলে যায়।
সকাল ৭টার দিকে আমার বাবা নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। কিন্তু আমি কিছুতেই রাতের ঘটনা মেনে নিতে পারছিলাম না। পরবর্তিতে ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় আমার বাবার গলা কেটে দিই। শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করি। ঘটনার সময় আমার মা আমার সাথেই ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মতিউর রহমান মতি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। তার অন্য দুই সন্তান বড় ছেলে ২৭ বছর বয়সী তাজমুল ও ছোট ছেলে ২৪ বছর বয়সী নাজমুল। মেয়ে ময়না খাতুনের স্বামী কাশিপুর গ্রামের মোজামের পুত্র সুমন হোসেন দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে ১৩ দিন ধরে মায়না বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। নিহতের বড় ছেলে তাজমুল হোসেন তিন বছর ধরে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ছোট ছেলে নাজমুল গত বৃহস্পতিবার নিজ শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান।
স্থানীয়রা বলেন, নিহত মতিউর রহমান মতি ছিলেন একজন কিস্তি ব্যবসায়ী। তিনি দেহাটি মাঠ পাড়ায় নতুন বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছিলেন। আমরা কখনো তার এরকম কথা শুনিনি। মা ও মেয়ে মিলে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা বিশ্বাস করা যায় না। এর পেছনে অন্য কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে।
নিহতের বড় ছেলে তাজমুল হোসেন বলেন, আমি তিন বছর ধরে আমার শ্বশুরবাড়ি মহেশপুর থানার কুসুমপুরে বসবাস করছি। আমার বাবার সাথে প্রায় আমার ফোনে কথা হয়। কিন্তু আমার বাবার বিষয়ে এরকম অপবাদ কখনো আমার মা বা বোনের কাছ থেকে শুনিনি।
ছোট ছেলে নাজমুল হোসেন বলেন, আমি গত বৃহস্পতিবার রাতে আমার শ্বশুরবাড়ি যাই। কিন্তু আজ সকালে শুনতে পারি আমার মা ও বোন আমার বাবাকে হত্যা করেছে। তাছাড়া আমার মা ও বোনের কাছ থেকে আমি কখনো আমার বাবার সম্বন্ধে এরকম অপবাদ শুনিনি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি এস এম জাবিদ হাসান বলেন, আমরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটা শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। সেই সাথে মা ও মেয়েকে আটক করি এবং তারা মতিউর রহমান মতিকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকার করেন। এ ছাড়াও ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কিনা সেটি আমরা তদন্তপূর্বক পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।