কক্সজাজার : কুচকুচে কালো রঙের বেশ মোটাতাজা শরীরের কোরবানির পশুটির নাম রাখা হলো ‘কালো মানিক’। গলায় মালা পরানো হয় সোনালি রঙের। খানিক দূরেই লাল রঙের আরেকটি বড় গরুর নাম রাখা হয়েছে ‘মেসি’। আছে ‘বাদশা’ নামের গরুও। বাহারি নামের এসব গরুকে ঘিরে ছিল উৎসুক সাধারণ মানুষের ভিড়।
৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠের কোরবানির পশুর হাটে গিয়ে এই চিত্র দেখা যায়। হাটে ‘কালো মানিক’ নামের গরুটি ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। পাঁচ লাখ টাকা দাম হাঁকা হলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত গরুটির দাম ওঠে সাড়ে তিন লাখ টাকা। কিন্তু গরুর মালিক উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের বাহারছড়ার পানচাষি কালা মিয়া তাতে রাজি হননি।
কালা মিয়া (৪২) জানান, নয় মাস আগে তিনি ৭২ হাজার টাকা দিয়ে এই গরুটি শাহপরীর দ্বীপ করিডর থেকে কেনেন। গরুটি মিয়ানমারের। তখন গরুর ওজন ছিল তিন মণের কাছাকাছি।
গরুটির পেছনে একজন শ্রমিক দিয়ে পরিচর্যার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ঘাস, ভুসি, ভাত খাওয়ানোর পর ভালো মোটাতাজা হয়েছে।
টেকনাফে উপজেলার সবচেয়ে বড় এই কোরবানির পশুর হাটে ‘মেসি’ ও ‘বাদশা’ নামের বড় গরুও বিক্রি হচ্ছে। এসব পশুর দাম হাঁকা হচ্ছে আড়াই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত। গত মঙ্গলবার এই হাটে বিক্রির জন্য আনা হয়েছে দেড় হাজারের মতো পশু। এর মধ্যে দেশীয় পশু বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। কারণ এবার মিয়ানমারের পশু আসছে কম।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়া পাড়ার ফরিদ আলম হাটে বিক্রির জন্য আনেন ‘মেসি’ নামের লাল-কালো রঙের বিশাল এক গরু। গরুর ওজন হবে প্রায় আট মণ। গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে পাঁচ লাখ টাকা। লোকজন ‘মেসির’ সামনে পেছনে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে তুলছে সেলফি। সেই সেলফি আপলোড হচ্ছে ফেসবুকে।
ফরিদ আলম (৪২) জানান, এ পর্যন্ত গরুটি কিনতে কক্সবাজার, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের ৩৫ জন এসেছে। গরুটির দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এই দামে তিনি বিক্রি করছেন না। চার লাখের বেশি পেলে তিনি ‘মেসিকে’ বিক্রি করবেন।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালিয়া পাড়ার কৃষক আবদুল আমিন নামের আরেক ব্যক্তি মোটাতাজা এক জোড়া গরু নিয়ে আসেন। গরু দুটির নাম রাখেন ‘জোড়া মানিক’। গরু দুটির দাম হাঁকা হচ্ছে সাড়ে সাত লাখ টাকা।
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ও পশু ব্যবসায়ী আবু ছৈয়দ হাটে আনেন ‘বাদশা’ নামের একটি মোটা গরু। ছয় মণ ওজনের বাদশার দাম হাঁকা হচ্ছে চার লাখ টাকা।
হাটবাজারের ইজারাদারের উশুল আদায়কারী আহমদ হোসেন বলেন, প্রতিদিন এই হাঁট থেকে সাত শতাধিক পশু বিক্রি হচ্ছে। তার মধ্যে ৪৫ থেকে ৫৫টি বড় গরু। যেগুলোর ওজন পাঁচ থেকে সাত মণ। দুই থেকে চার মণ ওজনের পশু বিক্রি হচ্ছে ৯০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকা। -প্রথম আলো
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম