বুধবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৯:১০:৩১

টেকনাফের বাঙারীরা নিজের বাড়িতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে!

টেকনাফের বাঙারীরা নিজের বাড়িতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে!

ফারহানা পারভীন : টেকনাফের কুতুপালং এলাকার একটি গ্রাম। এই গ্রামে কয়েটি বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা কয়েকটি রোহিঙ্গা পরিবার। পরিবারের একটি পুরুষ সদস্য বলছিলেন কেন তাদের তিনি আশ্রয় দিয়েছেন।

"এখান থেকে দেখছি হেলিকপ্টার উঠছে ওখানে, ঘরবাড়ি জালিয়ে দেয়া হচ্ছে। মানুষজন না খেতে পেয়ে পাগলের মত হয়ে গেছে। তাই থাকতে দিয়েছি, ওরা ওখানে গেলে নাসাকা বাহিনী মেরে ফেলবে, এপারে বিজিবি ধরে ফেলবে"।

এই পরিবারটি মত টেকনাফের স্থানীয় বাঙালিদের অনেকেই আশ্রয় দিয়েছেন রোহিঙ্গাদের। প্রশাসন জানতে পারলে ঝামেলা হতে পারে, তা জেনেও তারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কুতুপালংয়ের পাশের একটি গ্রামে এক বাড়িতে আশ্রয় পেয়েছেন তিনজন রোহিঙ্গা মুসলমান।

টেকনাফের স্থানীয় এই আশ্রয়দাতা মহিলা বলছিলেন, তার কাছে মনে হয়েছে জীবন বাঁচানো ফরজ। "পরেরটা পরে দেখা যাবে"। শুধু মানবিকতার কারণেই তিনি ঐ তিনজনকে আশ্রয় দিয়েছেন বলে জানাচ্ছিলেন।

মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বাংলাদেশে এসে বসবাস করার ইতিহাস দীর্ঘ। সহিংসতার জেরে তারা বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে আসে টেকনাফে। আর বসবাস করে সেখানকার স্থায়ী-অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে।

তবে এখানে এসে নানা ধরণের অপরাধমূলক কাজে জরিয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। তাই তাদের ব্যাপারে স্থানীয়দের রয়েছেন কিছুটা নেতিবাচক মনোভাব।

কিন্তু গত দেড় মাস ধরে যে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান নতুন করে এসেছে তাদের ব্যাপারে কেন তাদের এই ইতিবাচক সাড়া ?

যে মহিলা তার বাড়ীতে পাঁচ সদস্যের গোটা পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছেন, তিনি বলছিলেন- "ওরা এসে নির্যাতনের যে বর্ণনা দিয়েছে তাতে তার শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠেছে"। তিনি বলছিলেন বাচ্চারা দিনের পর দিন না খেয়ে থাকছে, তাই তাদের আশ্রয় দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম বলছে নতুন করে সহিংসতায় বাংলাদেশে ২১ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। বরাবরাই তাদের প্রবেশের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কঠিন অবস্থান ছিল। টেকনাফের স্থানীয় প্রশাসন থেকেও নিষেধ করা হয়েছে তাদের আশ্রয় না দেয়ার জন্য। তবে কেন এই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও স্থানীয় বাংলাদেশিরা তাদের সাহায্য করছেন ?

কুতুপালং গ্রামের আশ্রয়দাতা ব্যক্তিটি (নাম বলতে চাননি তিনি) বলেন, প্রশাসন জানতে তারা বিপদে পড়তে পারেনই আশঙ্কায় কয়েকজনকে আশ্রয় দেয়ার কথা তিনি গোপন রেখেছেন। এ ব্যক্তি যে পরিবারটিকে আশ্রয় দিয়েছেন তাদের মধ্যে দুইজন গুরুত্বর অসুস্থ ছিল। তিনি তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছেন। তবে এসব সাহায্য সই গোপনে। বিবিসি

৭ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে