কক্সবাজার থেকে : ক্রমশই গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মায়ানমার। দেশটির সেনাবাহিনী ও রোহিঙ্গা উগ্রবাদীদের লড়াইয়ে ভিটেমাটি হারানো হাজার হাজার শরণার্থীদের ঢল নেমেছে বাংলাদেশ সীমান্তে। ফলে প্রবল চাপে পড়েছে বাংলাদেশ সীমান্ত।
কক্সবাজারের উখিয়ার সীমান্তবর্তী ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি)’র ক্যাম্প থেকে ব্যাপক ফাঁকা গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ভারী অস্ত্রের ব্যবহার ও বিকট শব্দে বাংলাদেশ সীমান্তের মানুষ চরম আতংকিত হয়ে পড়েছে। ২৬ আগস্ট শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে এ গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে পুরো সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশ দমন ও সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়। তাদের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে সীমান্তের জিরো পয়েন্টে জড়ো হচ্ছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা।
সূত্রের খবর, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে তুমুল লড়াই চলছে রোহিঙ্গা উগ্রবাদী ও সে দেশের সেনাবাহিনীর। ফলে প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে শরণার্থীরা। বৃহস্পতিবার রাত থেকে বেশ কয়েকবার টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। তবে সতর্ক থেকে সে চেষ্টা বিফল করে দেয় বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ‘বিজিবি’।
টেকনাফ সীমান্তের বিজিবির লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম জানান, রোহিঙ্গারা বেশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে নৌকায় করে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করা হয়। কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের শুক্রবার বিকেলে শ’দুয়েক রোহিঙ্গারা প্রবেশের চেষ্টা করে। বিজিবি সেখান থেকেই তাদের ফেরত পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন এক কর্মকর্তা।
বৌদ্ধপ্রধান দেশ মায়ানমারে রয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ মুসলিম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা মানুষ। তবে আজও তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি নেইপিদাও। মিলিটারি জুন্টার হাত থেকে দেশের আংশিক ক্ষমতা আং সু কি-র হাতে গেলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সু সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশকারী। তাদের জঙ্গি আন্দোলন মেনে নেওয়া হবে না।
ইতিমধ্যে এই পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি ও মায়ানমার সেনার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন জানান, মায়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী কয়েকটি সংগঠন সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। সম্প্রতি ৭০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এছাড়া কয়েকদশক থেকে ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে রয়েছে।
এমটিনিউজ/এসবি