নিউজ ডেস্ক: রাখাইন অঞ্চলে ঘাঁটির পাশাপাশি সামরিক স্থাপনা নির্মাণের জমি অধিগ্রহণ করতে আবারো রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন শুরু করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। পাশাপাশি সাগর থেকে পালিয়ে আসার সময় মিয়ানমার বাহিনীর ধাওয়ার মুখেই ঘটছে নৌকাডুবি এবং প্রাণহানি। এমনটাই অভিযোগ রোহিঙ্গাদের। এ অবস্থায় গত ১০দিনে টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্ত দিয়ে ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা ঢুকেছে বাংলাদেশে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এমন আচরণ মানবাধিকারের চূড়ান্ত লঙ্ঘন।
গত ৪৫ দিন ধরে হত্যা, অগ্নিসংযোগের মতো নির্যাতন সত্বেও যেসব রোহিঙ্গা মাটি কামড়ে মিয়ানমারে পড়ে ছিলো, এখন তাদেরকে টার্গেট করে নির্যাতন চলছে দেশটির সেনাবাহিনী। গত ক’দিনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দাবি, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা মংডু, আকিয়াব, বুচিদং ও রাশিদং জেলায় সামরিক বাহিনীর ঘাঁটি নির্মাণের পাশাপাশি নানা ধরণের স্থাপনা নির্মাণ করছে। আর তাই জায়গা ছেড়ে দিতে চলছে নতুন করে নির্যাতন।
রোহিংঙ্গারা বলেন, 'নির্যাতন করে আমাদের দেশ বের করে দিয়েছে। আমাদের জমিতে ঘাঁটি বসিয়েছে। ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সীমানা পাড়ি দিয়ে আমরা বাংলাদেশে এসেছি। ঘাটি বসানোর জন্য আমাদের নির্যাতন করে ঘরছাড়া করছে।'
সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে কমে আসলেও অক্টোবরের শুরু থেকে বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ হচ্ছে। ভোর না হতেই রোহিঙ্গাবাহী নৌকাগুলো চলে আসছে টেকনাফের শাহপরী দ্বীপসহ আশপাশের এলাকায়।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন বলেন, 'রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন এখনও বন্ধ হয়নি যার কারণে তারা এখানে আসছে।'
কক্সবাজার টেকনাফ থানা রিদর্শক (অপারেশন) শফিউল আজম বলেন, 'নতুন করে রোহিঙ্গাদের উপর জ্বালাও পোড়াও করে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করছে।'
নির্যাতনের মুখে দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়েও রক্ষা মিলছেনা রোহিঙ্গাদের। নৌকা দিয়ে নাফ নদী অতিক্রমের মিয়ানমার বাহিনী ধাওয়া করে বলেও অভিযোগ রোহিঙ্গাদের। ফলে নৌকা ডুবে প্রায়ই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে।
রোহিঙ্গারা বলছেন, 'আমাদের যেখানেই পাচ্ছে, সেখানেই পুড়িয়ে মারছে। ঘরবাড়ি কেড়ে নিয়ে আমাদের তাড়িয়ে দিচ্ছে।'
মিয়ানমার সরকারের এ ধরণের কর্মকান্ডকে চূড়ান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন বলছেন মানবাধিকার কর্মীরাও।
কারিতাস বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট বিশপ জেভার্স রোজারিও বলেন, 'রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের বৈধ নাগরিক। এখন যে এদের তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেটা কোন রাষ্ট্রীয় আইন বা আন্তর্জাতিক আইনে গ্রহণযোগ্য না।'
বিদেশী সংস্থাগুলো এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ করেছে বলে জানালেও স্থানীয়দের দাবি এ সংখ্যা ৬ লাখ পেরিয়েছে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস