কক্সবাজার থেকে : চিরকুট লিখে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ টেকনাফের জনসাধারণের মধ্যে এ আত্মহত্যা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। মঙ্গলবার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নয়াবাজার হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী নূর বেগম (১৫) প্রেমের বিরহ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
বাবা-মা বেড়াতে যাওয়ার সুযোগে খালি বাড়িতে ঘরের চালার তীরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। তার ছোট ভাই নুরুল আবছার বোনের ঝুলন্ত লাশ দেখে চিৎকার করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর বেরিয়ে আসে স্কুল পড়ুয়া প্রেমিক জুটির ধনী-গরিবের ব্যবধানে গড়া অব্যক্ত প্রেমের কাহিনী।
এদিকে আত্মহত্যার আগে নূর বেগমের লিখে যাওয়া চিরকুটের সূত্র ধরে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে তার জীবনের প্রেমের কাহিনীসহ মা-বাবার অন্যত্র বিয়ে দেয়ার তোড়জোড়। যার কারণে নূর বেগম গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার মাধ্যমে স্বপ্নভরা একটি প্রেমিক জুটির স্বপ্নভঙ্গ ইতিহাস সৃষ্টি করলো।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, একই গ্রামের প্রবাসী নুরুল আমিনের মেয়ে নূর বেগম ও মৃত মৌলভী ছৈয়দ আহমদের পুত্র মো. শাহজাহান নয়াবাজার হাইস্কুলে পড়াশুনা করতো। নূর বেগম প্রতিদিন শাহজাহানের বাড়ির উপরের রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়াসহ একসঙ্গে চলাফেরায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
শাহজাহানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার বিষয়টি জানতে পারেন মা। শাহজাহানের পরিবার গরিব বিধায় এ সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। ফলে রক্ষণশীল পরিবার মেয়ে উপযুক্ত হওয়ার কারণে মোবাইল ব্যবহার নিষিদ্ধ করে দিয়ে বাড়ির বাউন্ডারি দেয়ালের মধ্যে মেয়েকে সীমাবদ্ধ রাখে।
এদিকে নূর বেগমের মা-বাবা দ্রুত মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চিন্তা ভাবনা করেন। এরই সূত্র ধরে প্রবাসী পিতা নুরুল আমিন প্রায় ৬ মাস আগে দেশে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যে মা-বাবা তার বিয়ের কথাবার্তা পাকাপোক্ত করে ফেলে।
বিষয়টি নূর বেগম জানতে পেরে ভেঙে পড়ে। কিন্তু নূর বেগমের পিতা নুরুল আলম এই বিষয়টি অস্বীকার করেন। তার শেষ লেখা চিরকুটে পরিচয়হীন ‘মো. শাহজাহানের মধ্যে আমাকে দেখতে পাবে’। এ ছাড়া তাকে কিছু না করার জন্যও চিরকুটে উল্লেখ করেছেন।
এমটিনিউজ/এসবি