আবদুল আজিজ : রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েনের সৃষ্টি হয়েছে ঠিকই। তবে এর প্রভাব পড়েনি ব্যবসা-বাণিজ্যে। অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে।
প্রায় প্রতিদিন টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের করিডোর দিয়ে শত শত গরু, মহিষ ও ছাগল নাফ নদী পার হয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসছে। গবাদি পশুর আমদানি গত এক সপ্তাহে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
গবাদি পশুর আমদানি বেশি থাকলেও দাম কিন্তু কমেনি। ভারত থেকে গবাদি পশু আমদানি বন্ধ থাকায় দামের ওপর প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
সরেজমিন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ ধরে শাহপরীর দ্বীপের করিডোর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে গবাদি পশু এসেছে। হঠাৎ করে মিয়ানমার থেকে গবাদি পশুর চালান বেড়েছ। এতে পশু আসলেও দাম অন্যান্য সময়ের চেয়ে দাম একটু বেশি।
টেকনাফের গরু ব্যবসায়ী ছলিম উল্লাহ বলেন,‘ভারতে গরু আমদানি বন্ধ রয়েছে। তাই মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশে গরু রফতানি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। গত একদিনে দুই হাজারের বেশি গরু ও মহিষ এসেছে। এ নিয়ে এক সপ্তাহে ১০ হাজারের বেশি গরু ও মহিষ নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। তবে দাম একটু বেশি।’
আরেক গরু ব্যবসায়ী মোজাহের আলম বলেন, ‘গরু আসলে কী হবে। দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে মিয়ানমারের গবাদি পশুর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। দীর্ঘদিন ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ থাকায় মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি বেড়েছে।’
টেকনাফ স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘রোহিঙ্গারা সংকট শুরু হওয়ার পর এক প্রকার গরু আমদানি-রফতানি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে এখন তা পুনরায় আসা শুরু করেছে। কারণ,ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ থাকায় সারাদেশে মিয়ানমারের গরুর চাহিদা বেড়ে গেছে। এ কারণে মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার গরু আসছে।’
মিয়ানমার থেকে গরু আসা বেড়ে যাওয়ায় বন্দরে রাজস্ব আয়ও বেড়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, ‘গত মার্টে শাহপরীর দ্বীপ দিয়ে মিয়ানমার থেকে ১১ হাজার ৬৬৫টি গরু বাংলাদেশে এসেছে। এতে রাজস্ব আদায় করা হয়েছে ৫৮ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।’
রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে স্থল বাণিজ্যের কোনও সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন বলেন, ‘বাণিজ্য আলাদা বিষয়। আমরা তো বাণিজ্য বন্ধ করতে পারি না। তাহলে তো দেশ পিছিয়ে পড়বে। আমাদের অর্থনীতির গতি সঞ্চালন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের যে সমস্যা আছে সেটি তো আন্তর্জাতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে। আমি মনে করি মিয়ানামারের সঙ্গে বাণিজ্য আমাদের সঙ্গে ভালো থাকবে। স্থলবন্দর দিয়ে শুধু গবাদি পশু নয়, সব রকমের পণ্য আমদানি-রফতানি চলমান থাকবে।’ বাংলা ট্রিবিউন
এমটিনিউজ/এসএস